দীপ্ত নিউজ ডেস্ক
ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার পর হোয়াইট হাউসে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ।
হোয়াইট হাউসে স্থানীয় সময় শনিবার (২১ জুন) রাত ১০টায় (বাংলাদেশ সময় রবিবার (২২ জুন সকাল ৮টা) দেওয়া ওই ভাষণে ট্রাম্প যা বলেছেন, দীপ্ত নিউজের পাঠকদের জন্য তা বাংলায় হুবহু তুলে ধরা হলো।
‘ধন্যবাদ। কিছুক্ষণ আগে, মার্কিন সামরিক বাহিনী ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনা, ফোরদো, নাতাঞ্জ এবং ইস্পাহানে বড় আকারে হামলা চালিয়েছে। সবাই বছরের বছর ধরে এই ভয়াবহ ধ্বংসাত্মক স্থাপনাগুলোর নাম শুনে আসছেন। আমাদের লক্ষ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ ক্ষমতা ধ্বংস করা এবং সন্ত্রাসীদের পৃষ্ঠপোষকতা করা বিশ্বের ১ নম্বর রাষ্ট্রে পারমাণবিক হুমকি বন্ধ করা।
“আজ রাতে, আমি বিশ্বকে জানাতে পারি, ইরানে হামলাগুলো ছিল অসাধারণ সামরিক সাফল্য।ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ স্থাপনাগুলো সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিহ্ন করা হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের মাস্তান ইরানকে এখন শান্তি স্থাপন করতে হবে। যদি তারা তা না করে, তাহলে ভবিষ্যতের আক্রমণ অনেক বড় এবং অনেক সহজ হবে।”
আমেরিকার মৃত্যু ও ইসরায়েলের মৃত্যুর কথা ইরান গত ৪০ বছর ধরে বলে আসছে। তারা আমাদের জনগণকে হত্যা করছে, হাত উড়িয়ে দিচ্ছে– এটাই ছিল তাদের বিশেষত্ব। আমরা এক হাজারেরও বেশি মানুষকে হারিয়েছি। মধ্যপ্রাচ্য এবং বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষ তাদের ঘৃণার ফলস্বরূপ মারা গেছে। বিশেষ করে তাদের জেনারেল কাসেম সোলেইমানির হাতে অনেক মানুষ নিহত হয়েছে।
আমি অনেক আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে এটা আর চলবে না। আমি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু‘কে ধন্যবাদ এবং অভিনন্দন জানাতে চাই। আমরা একটি দল হিসেবে কাজ করেছি, যা সম্ভবত আগে কখনও কোনো দল করেনি, এবং আমরা ইসরায়েলের জন্য এই ভয়াবহ হুমকি মুছে ফেলার জন্য অনেক দূর এগিয়েছি।
আমি ইসরায়েল সেনাবাহিনী‘কে তাদের অসাধারণ কাজের জন্য ধন্যবাদ জানাতে চাই। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, আমি সেই মহান আমেরিকান দেশপ্রেমিকদের অভিনন্দন জানাতে চাই যারা আজ রাতে এই দুর্দান্ত মেশিনগুলো (বিমান) উড়িয়েছেন, এবং সমস্ত মার্কিন সামরিক বাহিনীকে এমন একটি অভিযানের জন্য অভিনন্দন জানাতে চাই, যা বিশ্ব বহু দশক ধরে দেখেনি। আশা করি, আমাদের আর আক্রমণের প্রয়োজন হবে না।
আমি জয়েন্ট চিফ অফ স্টাফ চেয়ারম্যান জেনারেল ড্যান ‘রাজিন’ কেইন এবং এই আক্রমণে জড়িত সামরিক সব প্রতিভাবানকে অভিনন্দন জানাতে চাই।
যা যা বললাম, তা এখানেই শেষ। হয় শান্তি আসবে, নয়তো ইরানের জন্য গত ৮ দিনে আমরা যা দেখেছি তার চেয়ে অনেক বড় ট্র্যাজেডি হবে। মনে রাখবেন, এখনও অনেক লক্ষ্যবস্তু বাকি আছে। আজ রাতের আক্রমণ ছিল সবচেয়ে কঠিন, এবং সম্ভবত সবচেয়ে মারাত্মক, কিন্তু যদি শান্তি দ্রুত না আসে, তাহলে আমরা নির্ভুলতা, দ্রুততা এবং দক্ষতার সঙ্গে অন্য লক্ষ্যবস্তুগুলোর জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ব। বেশিরভাগই কয়েক মিনিটের মধ্যে ধ্বংস করা যেতে পারে।
পৃথিবীতে এমন কোনো সেনাবাহিনী নেই যারা আজ রাতে আমরা যা করেছি তা করতে পারে, এমনকি কাছাকাছিও নয়। এমন কোনো সেনাবাহিনী কখনও ছিল না যারা কিছুক্ষণ আগে যা ঘটেছে তা করতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ এবং জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ড্যান কেইন আগামীকাল সকাল ৮টায় (পেন্টাগনে) একটি সংবাদ সম্মেলন করবেন, যেখানে এই হামলা সম্পর্কিত বিস্তারিত তুলে ধরা হবে।
ভাষণের শেষ দিকে ট্রাম্প বলেন, “আমি সকলকে, বিশেষ করে সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।
আমি শুধু বলতে চাই— আমরা আপনাকে ভালোবাসি, সৃষ্টিকর্তা। আমাদের মহান সেনাবাহিনী‘কে ভালোবাসি। তাদের রক্ষা করেন। সৃষ্টিকর্তা, মধ্যপ্রাচ্যের ওপর আশীর্বাদ করুন, ইসরায়েলের ওপর আশীর্বাদ করুন, এবং আমেরিকার ওপর আশীর্বাদ করুন।
আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। ধন্যবাদ।’
এসএ
