অনলাইনে জুয়া খেলে ১০ লাখ টাকা ধরা খায়। এই ১০ লাখ টাকার ক্ষতি পোষাতে ৪ বছরের শিশুকে অপহরণ করে চাওয়া হয় ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ। টেলিগ্রাম অ্যাপ ব্যবহার করে ভুক্তভোগী শিশুর চাচাকে ম্যাসেজ পাঠিয়ে এই মুক্তিপণ দাবি করে দেয়া হয় হত্যার আল্টিমেটাম। কিন্তু ওই ম্যাজেসের মধ্যে ‘খোতি‘ (ক্ষতি) বানান ছিল ভুল। আর এই ‘খোতি‘ বানানের সূত্র ধরেই ধরা পড়ে অপহরণকারী ও খুনি। উদ্ধার করা হয় শিশুটির বাক্সবন্দী মরদেহ।
অভিযুক্ত অপহরণকারী মো. ফয়সাল হোসেন (২৩) নিহত শিশু সালমান হোসেনের চাচাতো ভাই। সালমান পাবনার আতাইকুলা থানার আলোকচর পূর্বপাড়া এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে।
বুধবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে অভিযুক্ত মো. ফয়সাল হোসেনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আদালতে ১৬ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন সে। এর আগে অপহরণের দুদিন পর মঙ্গলবার রাতে ফয়সালের ঘরের বাক্স থেকে সালমানের লাশ উদ্ধার করে আতাইকুলা থানা পুলিশ।
অপহরণ ও খুনের রহস্য উদঘাটনে প্রধান ভূমিকা পালন করেন পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ–প্রশাসন) মাসুদ আলম। এবিষয়ে তিনি বলেন, প্রথমে ওই এলাকার টেলিগ্রাম ব্যবহার করেন কে তাদের খুঁজে বের করি। তখন আইটিতে পারদর্শী ফয়সালের ব্যাপারে জানতে পারি। এসময় ফয়সালকে জিজ্ঞাসাবাদ করি এবং তাঁকে রাজনৈতিক বিষয়ে মোবাইলে ৮/১০ লাইনের গদ্য লিখতে দেয়া হয়। প্রশ্নে ‘খোতি‘ (ক্ষতি) বানানটাও ছিল। উত্তরেও সে আবারো ‘খোতি‘ একই বানান লেখেন। তখনই আমার সন্দেহ হয়। এছাড়াও অনেকক্ষণ আমাদের হেফাজতে থাকায় টেলিগ্রামে আর কোনো রিপ্লাই আসছিলো না। একপর্যায়ে জিজ্ঞাসাবাদে সে অপহরণ ও হত্যার কথা স্বীকার করে।
তিনি আরও জানান, আসামি ফয়সাল হোসেন ছিলেন উচ্চ শিক্ষিত এবং প্রযুক্তি বিদ্যায় পারদর্শী। স্থানীয় একটি আইটি স্কুলে শিক্ষকতাও করেন। অনলাইন জুয়া এবং প্রতারণার সাথেও জড়িত ছিলেন। সম্প্রতি অনলাইন জুয়া খেলায় ৮/১০ লক্ষ টাকা ধরা খেয়েছিলেন। এই টাকা উঠাতে গিয়ে তার চাচা আবুল হোসেনের একমাত্র শিশু পুত্র সালমানকে টার্গেট করেন। জানাজানি হওয়ার ভয়ে ছোট্ট শিশুকে নৃশংসভাবে হত্যা করে বাক্সের মধ্যে ফেলে রাখে।
শামসুল/ আল / দীপ্ত সংবাদ