এমআরটি পুলিশের হামলার প্রতিবাদে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) কর্মীরা কর্মবিরতি পালন করছেন।
সোমবার (১৭ মার্চ) সকাল থেকে মেট্রোরেল চলাচল করলেও বন্ধ রয়েছে টিকেটিং কার্যক্রম। এতে বিনা টিকিটে ভ্রমণ করছেন যাত্রীরা।
কার্ড পাঞ্চ করার মেশিনের সার্ভার বন্ধ থাকায় টিকিট একটিভ না করেই ভ্রমন করছেন যাত্রীরা।
মতিঝিল থেকে কারওয়ানবাজারে আসা ইয়াসীন আরাফাত নামে এক যাত্রী জানান, মতিঝিল স্টেশনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। কার্ড পাঞ্চ করার মেশিন বন্ধ। দায়িত্বরত এক আনসার সদস্য বললেন সরাসরি প্লাটফর্মে চলে যেতে। এতে টিকিট পাঞ্চ না করেই চলে এলাম।
নুসরাত জাহান নামে আরেক যাত্রী বলেন, আমিও একবারে ফ্রি যাত্রা করলাম। বিষয়টা একদম ভালো লাগলো না।
কর্মবিরতির পালনের ঘোষণা দেওয়ায় বন্ধ রয়েছে কর্মীদের কার্যক্রম। এতে বিনা টিকিটে ভ্রমণ করতে পারছেন যাত্রীরা।
এর আগে গতকাল রবিবার (১৬ মার্চ) ‘ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের’ ব্যানারে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঘটনা তুলে ধরে হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল বিকেল সোয়া ৫টায় সচিবালয় স্টেশনে দুজন নারী কোনো প্রকার পরিচয়পত্র প্রদর্শন না করেই সিভিল ড্রেসে বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণ করে এসে ইএফও অফিসের পাশে থাকা সুইং গেইট ব্যবহার করে পেইড জোন থেকে বের হতে চান।
যেহেতু তারা নির্ধারিত ইউনিফর্ম পরিহিত ছিলেন না ও তাদের পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। তাই দায়িত্বপ্রাপ্ত সিআরএ নিয়ম অনুযায়ী তাদের সেখান থেকে পিজি গেট ছাড়া সুইং গেট দিয়ে বের হওয়ার কারণ জানতে চান। সংশ্লিষ্ট পুলিশের কর্মকর্তারা এতে উত্তেজিত হয়ে তর্কে লিপ্ত হন। একপর্যায়ে এমআরটি পুলিশের কন্ট্রোল রুমে চলে যান।
পরে ঠিক একইভাবে দুজন এপিবিএন সদস্য সুইং গেট ব্যবহার করে সুইং গেট না লাগিয়ে চলে যান। এ বিষয়ের তাদের কাছে কারণ জানতে চাওয়া হলে তারা পূর্বের ঘটনার জের ধরে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। কিছুক্ষণ পরে পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে আরও কয়েকজন পুলিশ এসে দায়িত্বে থাকা সিআরএ’র সঙ্গে ইএফওতে তর্কে জড়িয়ে পড়েন।
ইএফও থেকে বের হওয়ার সময় কর্মরত সিআরএ’র কাঁধে বন্দুক দিয়ে আঘাত করেন এবং কর্মরত আরেকজন টিএমও’র শার্টের কলার ধরে জোরপূর্বক এমআরটি পুলিশ বক্সে নিয়ে গিয়ে মারধর করেন এবং গুলি করার জন্য বন্দুক তাক করেন। উপস্থিত স্টেশন স্টাফ ও যাত্রীগণ বিষয়টি অনুধাবন করে উক্ত এমআরটি পুলিশের হাত থেকে কর্মরত টিএমওকে পুলিশের কাছ থেকে বাঁচিয়ে নিয়ে আসে। উক্ত পরিস্থিতি মেট্রোরেল কর্মপরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরূপ।
বর্তমানে আহত (রাইফেল দিয়ে কাধে আঘাত করা হয়) সিআরএকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা প্রদান করার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় এবং টিএমও (যাকে পুলিশ কন্ট্রোল রুমে হেনস্তা করা হয়, গুলি করার জন্য বুকে রাইফেল ধরা হয়) তিনি উক্ত ঘটনার পর ঘটনার বিবৃতি দেয়ার পর বাসায় যাওয়ার পথে জ্ঞান হারিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
এই ঘটনার প্রতিবাদে ডিএমটিসিএল কর্মীরা ৬টি দাবি তুলে ধরেছেন: ১. ঘটনার মূল হোতা পুলিশ সদস্য এস আই মাসুদসহ সকল পুলিশ সদস্যকে শাস্তি প্রদান করতে হবে এবং তাদের প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।
২. মেট্রোরেল ও এর কর্মীদের নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব সশস্ত্র বাহিনী গঠন করতে হবে।
৩. এমআরটি পুলিশকে অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
৪. স্টেশন কর্মীদের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
৫. স্টেশনে অফিসিয়াল পরিচয়পত্র ছাড়া কোনো ব্যক্তি যাতে পেইড জোনে প্রবেশ করতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে।
৬. আহত কর্মীদের চিকিৎসার দায়িত্ব কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে।