বর্তমানে ফুটবলার ও কোচের দ্বন্দ্ব বাংলাদেশ নারী ফুটবল ক্রীড়াঙ্গনের অন্যতম আলোচিত ইস্যু। এরই মাঝে হত্যা এবং ধর্ষণের হুমকি পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন সাফজয়ী ফুটবলার মাতসুশিমা সুমাইয়া।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে দেওয়া একটি পোস্টে এই দাবি করেছেন তিনি।
সুমাইয়া দুটি ছবি দিয়ে ইংরেজিতে লিখেছেন, “আসসালামু আলাইকুম। আমি মাতসুসিমা সুমাইয়া, বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের একজন খেলোয়াড়। ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে থাকাকালে ফুটবল খেলা শুরু এবং মালদ্বীপে ২০২৪ সাফ ওমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপে সাফল্য পাওয়ার এই যাত্রাটা বেশ অম্লমধুর। যখন আমি পথটি বেছে নিই, আমার স্বপ্ন ছিল তরুণ শিক্ষার্থীদেরও এই পথের স্বপ্ন দেখানো, যাদের বাবা–মা পড়ালেখাকেই কেবল গুরুত্ব দেন।’
‘আমি দেখাতে চেয়েছি আবেগ এবং নিবেদন থাকলে যেকোনো বাধা ভেঙে এগিয়ে যাওয়া যায়। কিন্তু এই মুহূর্তে আমার অনুশোচনা হচ্ছে। আক্ষেপ হচ্ছে এই কারণে যে আমি এমন এক দেশকে সেবা দিতে শিক্ষা, পরিবার, ঈদ সবকিছু বিসর্জন দিয়েছি; যেখানে এসব সংগ্রামের কোনো মূল্য–ই নেই।’
এরপরই অনাকাঙ্ক্ষিত হুমকির কথা জানিয়ে সুমাইয়া লিখেছেন, ‘ফুটবলে ক্যারিয়ার গড়তে আমাকে বাবা–মায়ের সঙ্গেও লড়তে হয়েছে, বিশ্বাস ছিল আমার দেশকে অন্তত পাশে পাব। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। কেউই সত্যিকার অর্থে একজন অ্যাথলেটের মানসিক স্বাস্থ্যকে পরোয়া করে না। আমি এবং আমার সতীর্থদের কী পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে সে সম্পর্কে (ইংরেজি চিঠিতে) জানানো আমার ন্যূনতম সামর্থ্য আছে। কিন্তু গত কয়েকদিনে, আমি অসংখ্য হত্যা ও ধর্ষণের হুমকি পেয়েছি– সেখানে এমনও শব্দ আছে, যা অকল্পনীয়ভাবে আমাকে বিধ্বস্ত করে দিচ্ছে।’
‘আমি জানি না এই ট্রমা কাটিয়ে উঠতে আমার কতটা সময় লাগবে। এতটুকু জানি যে, নিজের স্বপ্নের পেছনে দৌড়ানো কাউকে এমন পরিস্থিতিতে পড়া কখনোই উচিৎ নয়’, আরও যোগ করেন জাপানি মায়ের কন্যা সুমাইয়া।
প্রসঙ্গত, কোচ বাটলারকে নিয়ে বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়ালের কাছে চিঠি দিয়েছিলেন বাংলাদেশ নারী দলের ১৮ ফুটবলার। তাদের অভিযোগ তদন্তে একটি কমিটি গঠন করে বাফুফে। পরবর্তীতে বিশেষ এই কমিটি গত ২ ফেব্রুয়ারি বয়কটের ডাক দেওয়া ফুটবলারদের মধ্যে সাবিনা–সুমাইয়াসহ ৭ জনের জবানবন্দি নিয়েছে। এর আগে বাফুফে সভাপতির কাছে পাঠানো লিখিত অভিযোগের সঙ্গে ইংরেজি চিঠি লিখেছিলেন জাপানিজ বংশোদ্ভুত ফুটবলার সুমাইয়া মাতসুসিমা।
এসএ