দিনাজপুর খানসামায় নতুন বইয়ের ঘ্রাণে বছরের যে সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে থাকে শিক্ষার্থীদের সরব উপস্থিতি সেখানে ব্যতিক্রম চিত্র হোসেনপুর দাখিল মাদ্রাসার শ্রেণীকক্ষে। কাগজ–কলমে শিক্ষার্থী থাকলেও বাস্তবে নেই। শিক্ষক–কর্মচারী, শ্রেণীকক্ষ কিংবা বেঞ্চ থাকলেও শিক্ষার্থী উপস্থিতি নাজুক।
এদিকে অফিস কক্ষ, বারেন্দায় ও মাঠে বসে খোশগল্পে অলস সময় কাটায় শিক্ষকরা বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।
ইতিপূর্বেও এই প্রতিষ্ঠানের কম উপস্থিতি বিষয়ে সর্তক করলেও সেটির তেমন উন্নতি না হওয়াকে দু:খজনক বলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।
এমনই এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি উপজেলার ২নং ভেড়ভেড়ী ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামে। এটি পাকেরহাট থেকে খানসামা যাওয়ার মূল রাস্তার পার্শ্বেই অবস্থিত।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া এই মাদ্রাসাটি ১৯৯৯ সালে এমপিওভুক্ত হয়। ইবতেদায়ী শাখা থেকে দাখিল শ্রেণী পর্যন্ত পাঠদান করা হয়। খাতা–কলমে মোট ২৬২ শিক্ষার্থীর মধ্যে ইবতেদায়ী শাখায় ১১২ জন ও ৬ষ্ঠ থেকে দাখিল পর্যন্ত ১৫০ জন শিক্ষার্থী এবং পাঠদানের জন্য কর্মরত রয়েছেন ১৩ জন শিক্ষক ও ৫ কর্মচারী।
রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১১ টার টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে মূল রাস্তা থেকে মাদ্রাসার দিকে তাকালেই দেখা যায়, শিক্ষক–কর্মচারীরা কেউ মাঠে ও বারান্দায় রোদ পোহাচ্ছেন। কেউ বসে খোশগল্পে মেতে উঠছেন আর কেউ মোবাইল হাতে সময় কাটাচ্ছেন। মাঠে ঢুকতেই দেখা যায় শ্রেণীকক্ষগুলোতে শিক্ষার্থী উপস্থিতি নাজুক। সংবাদকর্মী বুঝতে পেরে নড়েচড়ে বসে শিক্ষকরা।
ঐ মাদ্রাসার শ্রেণীকক্ষগুলো ঘুরে দেখা যায়, খাতা–কলমের সাথে শিক্ষার্থী উপস্থিতির তেমন মিল দেখা যায়নি। ইবতেদায়ী শাখার শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন হাফেজিয়া মাদ্রাসায় পড়লেখা করে এই মাদ্রাসা থেকে পরীক্ষায় অংশ নিলেও ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণির ১০ জন শিক্ষার্থীর উপস্থিতি দেখা গেছে। এছাড়াও ২–৩ জন শিক্ষার্থী আসন্ন দাখিল পরীক্ষার প্রবেশপত্র নেওয়ার জন্য এসেছে।
উপস্থিত শিক্ষক–কর্মচারীদের সাথে রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) কথা হলে তাঁরা জানায়, এই প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ শিক্ষার্থী বিভিন্ন কর্মের সাথে জড়িত থাকায় উপস্থিতি এত কম। শিক্ষার্থী উপস্থিত নিশ্চিত করতে তাঁরা অভিভাবকদের সাথে কথা বলবে বলে জানায়।
হোসেনপুর দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. এনামুল হক সরকার বলেন, অধিকাংশ শিক্ষার্থী শ্রমজীবি তাই উপস্থিতি কম। তবে গত কয়েক বছরের তুলনায় ফলাফল এখন ভালো বলে তিনি দাবি করেন। সেই সাথে খাতা–কলমের সাথে উপস্থিতির মিল না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেনি।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: মনজুরুল হক বলেন, ইতিপূর্বেও ঐ মাদ্রাসায় কম শিক্ষার্থী উপস্থিতির বিষয়ে তাঁকে সর্তক করলে মাদ্রাসা সুপার ও শিক্ষকরা শিক্ষার্থী উপস্থিতি বৃদ্ধির বিষয়ে আশ্বাস করেছিলো। কিন্তু সেটির উন্নতি না হওয়া দু:খজনক। পুনরায় প্রতিষ্ঠানে উপস্থিতির বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হবে এবং কারো গাফিলতি থাকলে খতিয়ে দেখা হবে বলে তিনি জানান।
সুলতান / আল / দীপ্ত সংবাদ