শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪
শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪

ঝিনাইদহে শিলা বৃষ্টিতে ধানসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

Avatar photoদীপ্ত নিউজ ডেস্ক

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে হঠাৎ ঝড়ের সাথে শিলা বৃষ্টিতে বোরো ধানসহ বিভিন্ন ফসলী জমির ক্ষেত ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। উপজেলার শিমলারোকনপুর ও ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের ধান চাষীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এতে করে বিপাকে পড়েছে এ অঞ্চলের হাজারও চাষী।

সোমবার (২৪ এপ্রিল) বিকাল তিনটায় ঝড়ের সাথে শুরু হয় শিলা বৃষ্টি। প্রায় ১০ মিনিট ধরে হওয়া শিলা বৃষ্টিতে উপজেলার কয়েক হেক্টর জমির কাঁচাপাকা ধান নষ্ট হয়ে যায়। গাছ থাকলেও ঝরে পড়েছে ধান। এছাড়াও ফুল, কলা, পেয়ারা, ড্রাগন গাছসহ বিভিন্ন ফসলি জমির ক্ষেত ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এরমধ্যে উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা, ত্রিলোচনপুর, বানুড়িয়া, কাদিরকোল, ঘিঘাটি, গবরডাঙ্গা, পাতিবিলা, শ্রীরামপুরসহ কয়েকটি গ্রামের চাষীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

সরেজমিন মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) কয়েকটি গ্রামের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, ধানের গাছ দাঁড়িয়ে থাকলেও শীষ থেকে সব ধান ঝরে মাটিতে পড়ে গেছে। মাঠে কেটে রাখা ধানও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। শিলাবৃষ্টিতে কলা, পেয়ারা, গাঁদাফুল ও ড্রাগন গাছ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এদিকে ঝড়ে কাদিরকোল গ্রামে একটি মাদ্রাসার টিনের ছাউনি উড়ে গেছে।

কৃষি অফিস জানায়, এ বছর বোরো মৌসুমে এই উপজেলায় ১৫ হাজার ৭১৫ হেক্টর জমিতে ধানের চাষ হয়েছে। এরমধ্যে ৫৩৯ হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ২৫০ হেক্টর জমিতে চাষ হওয়া কলা ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ৩৫ হেক্টর জমির। ৭৫ হেক্টর জমিতে চাষ হওয়া ফুল ক্ষেতের মধ্যে ১৫ হেক্টর জমির ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আম, ড্রাগনসহ বিভিন্ন ফল চাষ হয়েছিল ৩২০ হেক্টর জমিতে। এরমধ্যে ৩০ হেক্টর জমির ফল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি চাষ হয়েছিল ৬৪৫ হেক্টর জমিতে। এরমধ্যে ৩০ হেক্টর জমিতে চাষ হওয়া শাকসবজি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

কৃষকরা জানায়, এবার ধান চাষে সেচ ও সারের দাম বেশি হওয়ায় খরচ পড়েছে বেশি। এই শিলা বৃষ্টিতে যে ক্ষতি হয়েছে তা কোন ভাবে পোষানো সম্ভব না। আমার জমিতে যে ধান আছে তা একটাও ঘরে তুলা যাবে না। সার ও সেচ এর দাম কিভাবে দিবেন সেই চিন্তায় পড়েছেন।

বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের চাষী খালেক শেখ জানান, ১০ মিনিটের শিলা বৃষ্টিতে আমাগের সব শেষ হয়ে গিয়ে। এবার ধান চাষে ম্যালা (অনেক) খরচ হয়েছে। সার ও সেচের দাম কিরাম করে দিবানে সেই চিন্তায় পড়িছি। ২ বিঘা জমির একটা ধানও ঘরে তুলতি পারবোনা। ১ বিঘা জমির পিয়ারা সব পড়ে গিয়েছে।

আরেক ধান চাষী নপুর শেখ জানান, তিনি দেড় বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছিলেন। গতকালের (সোমবার) শিলা বৃষ্টিতে গাছ থেকে সব ধান ঝরে গেছে। একটা ধানও তিনি বাড়িতে নিয়ে যেতে পারবেন না। দেড় বিঘা জমিতে তিনি প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ করেছিলেন। এখন এক টাকাও পাবেন না।

পেয়ারা চাষী শরিফুল ইসলাম জানান, শিলা বৃষ্টিতে বাগানের প্রায় এক থেকে দেড়শ মন পেয়ারা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এছাড়াও বড় পেয়ারার সাথে ছোট ছোট গুটি গুলোও ঝরে গিয়েছে। নতুন করে গুটি না আসা পর্যন্ত পেয়ারা তোলা আর সম্ভব হবে না। ঝরা পেয়ারাও বাজারে বিক্রি হচ্ছে না। প্রায় ১ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

গাঁদা ফুল চাষি আরিফ হোসেন জানান, ঝড় এবং শিলা বৃষ্টিতে ফুল ঝরে গেছে ও গাছের সব মাথা গুলো ভেঙ্গে গিয়েছে। যে অবস্থা তাতে ফুল বিক্রি করে খরচের টাকা উঠানো সম্ভব না।

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার মাহবুব আলম রনি জানান, হঠাৎ শিলাবৃষ্টিতে ধান, আম, কলাসহ উপজেলার বিভিন্ন ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তিনি ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

যূথী/দীপ্ত সংবাদ

আরও পড়ুন

সম্পাদক: এস এম আকাশ

অনুসরণ করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন

স্বত্ব © ২০২৩ কাজী মিডিয়া লিমিটেড

Designed and Developed by Nusratech Pte Ltd.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More