মধ্যবয়স্কা রহিমা বেগম দাঁতে ব্যথা নিয়ে গেছেন ফার্মেসিতে। হাতে বহু পুরোনো প্রেসক্রিপশন। তখন ব্যথা সারাতে চিকিৎসক দিয়েছিলেন এন্টিবায়োটিক। কোর্স শেষ করার পর কয়েক মাস পর আবারও ব্যথা উঠলে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই নিজ সিদ্ধান্তে পুরোনো প্রেসক্রিপশন নিয়েই ওষুধ কিনতে যান তিনি।
পাড়া-মহল্লার ফার্মেসিগুলোয় দেখা মিলছে এন্টিবায়োটিকের অবাধ বিক্রির এমন নিত্ত- নৈমিত্তিক চিত্র। বাস্তবতার কথা অকপটে স্বীকার করলেন ওষুধ ব্যবসায়ী আর রোগীরা।
এভাবেই অপ্রয়োজনে বাড়ছে এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার। সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে প্রেসক্রিপশন ছাড়াই দেদারছে বাড়ছে এ ওষুধের বিক্রি। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে এ ধরনের ওষুধ কিনে খাচ্ছেন অনেক রোগী।
আশার কথা রাজধানীর বড় বড় হাসপাতাল সংলগ্ন ফার্মেসিগুলোয় কিছুটা ভিন্ন চিত্র। প্রেসক্রিপশন দেখে ওষুধ বিক্রির বাস্তবায়ন মোটামুটি দেখা যায় এসব জায়গায়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, আগামী এক যুগে অসংক্রামক ব্যধিতে যত মানুষ মারা যাবে, তার চেয়ে কয়েকগুন বেশি মৃত্যুবরণ করবে এন্টিবায়োটিকের অহেতুক ব্যবহারে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, বাজারে সর্বাধিক বিক্রি হওয়া এন্টিবায়োটিকের মধ্যে ৫ টি জীবাণু দ্বারা প্রতিরোধী। আর এর কারণে ৪০ থেকে ৭০ ভাগ রোগী এসব ওষুধে সুস্থ হয় না।
জনস্বাস্থ্যবিদ ডা. লেলিন চৌধুরীর মতে, এন্টিবায়োটিকের অপপ্রয়োগের কারণে ভয়ঙ্কর প্রতিরোধী হয়ে উঠছে জীবাণু। যা সুস্থতার পরিবর্তে বয়ে আনছে মৃত্যুঝুঁকি। তিনি জানান, জাতীয় ওষুধ নীতি প্রনয়ন না হওয়ার সুযোগ নিচ্ছেন অনেক চিকিৎসক ও ব্যবসায়ী।
এ বিষয়ে আগামীতে সরকার আরও কঠোর হবে বলে জানালেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সেই সাথে জাতীয় ওষুধ নীতি প্রনয়নের অগ্রগতির বিষয়ও তুলে ধরেন তিনি।
এন্টিবায়োটিকের অপব্যবহার রোধে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের আরও সক্রিয় ভূমিকার পাশাপাশি জনসচেতনতা চান সংশ্লিষ্টরা।