বাংলা ভাষার মাস ফেব্রুয়ারী। যাকে ঘিরে প্রতিবছর একুশ গ্রন্থ মেলা আয়োজিত হয়। দল-মত, জাতি-গোত্র নির্বেশেষে সবার উপস্থিতিতা রেখেই মাসব্যাপি চলে অমর একুশ গ্রন্থ মেলা। করোনা মহামারি কাটিয়ে নতুন আঙ্গিকেক বসেছে বই মেলা। তাকে ঘিরে একুশ গ্রন্থ মেলার কর্তৃপক্ষ শেখ রাসেল শিশু চত্ত্বরে আয়োজন করেছে “শিশু কর্ণার”।
বই মেলায় শিশু চত্ত্বর ঘুরে দেখা যায় গেছে নানা বয়সের শিশু-কিশোরদের আনাগোনা। কেউ চিত্রাঙ্গন করছে। কেউ কবিতা আবৃতিতে ব্যস্ত। অনেকে দলগত নাচ করছেন। আবার পাশেই অনেকেই কার্টুন আকা, বই থেকে পছন্দের বই খুঁজে নিচ্ছে। তেমনি মেলায় ঘুরতে আসা কাব্য (১২) বলেন, ” আমার জন্ম দিনেই হয় বই মেলা। আমার ঘুরতে এসে ভাল লাগছে। অনেক সুন্দর সুন্দর বই আছে। তবে আমার প্রিয় একমাত্র কার্টুন বই। আমিসহ বাসার সবাইকে মেলায় নিয়ে আসছি!”
জমজ মেয়েদের সঙ্গে নিয়ে মেলায় আসা এস এম আতিক নামের এক অভিভাবক জানান, মেলায় ভিন্নধর্মী এমন আয়োজন শিশুদের মনে ইতিবাচক অবস্থা দেয়। যা শিশুরা নতুন বিষয়কে জানতে পারে। এর মধ্যে ব্যক্তি স্বাধীনতা নিয়ে শিশু তার পছন্দের বই সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলে। গেল দুইবছর সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার প্রতি নেতিবাচক আসক্তি হয়েছে। তা অবশ্য অভিভাবকদের কাছে চিন্তনীয়। সেই সাথে, অভিভাবক শ্রেনীতে শিশুদের পছন্দমত বই কিনে দিতে না পারার বিষয়টি চোখে পরার মতো ছিল। মূলত বই দামের কারনে নাকি এমন অবস্থা হয়ে উঠছে।
বইয়ের দাম বেড়ে যাওয়া নিয়ে কথা হয় শিশু প্রকাশনী প্রগতি পাবলিশার্স পরিচালক আশরার মাসুদ জানান, ” আমরা দেশের সর্বপ্রথম ডাইকাট, পপ আপ ও ফ্লিপ, এনিমেশন, কালার ম্যাচিং আর্ট, ছবি গল্পসহ নানান সৃজনশীলতার বই নিয়ে এসছি। তবে আশানুরূপ বাজার সাড়া পাচ্ছি না। দাম বৃদ্ধিতে মুখ ফিরিয়ে নেয় অভিভাবকরা। বই তৈরি নিত্যপ্রয়োজনী সব বস্তুতে দিগুন দাম বেড়েছে। তাতেই সমস্যাটা দাঁড়িয়েছে। আমরা শিশুদের বই দিয়ে লাভের অবস্থান নিতে চাই না। যাতে টিকে থাকতে পারি সেই অনুপাতে লাভের অংক কষি। অভিভাবকদের আয় বৃদ্ধি একটা বিষয় আছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্যের দাম বাড়লেও তাদের আয়ের অবস্থান পরিবর্তন হয়নি।”
আজকের বই মেলার ৪র্থ দিনেও নানা ইস্যুতে বেশ কিছু জল্পনাকল্পনা কাজ করছে ক্রেতা-বিক্রতা ও প্রকাশনী প্রতিষ্ঠানের মাঝে। মেলা প্রর্দশনী স্টল দেখতে আসেন, বিশিষ্ট শিশু সাহিত্য লেখক জাফর ইকবাল, অভিভাবকদের এক প্রশ্নের জাবাবে তিনি বলেন, “মোবাইল বা ডিভাইস আসক্তিহীনতা তৈরি করতে আমাদের সচেতনত হওয়ার কোন বিকল্প নেই। গেল দুইবছর আমরা যে দূরত্ব মেনে চলেছি তাতে সত্যি সামাজিক সম্প্রতি ঘোলাটে হয়েছে। সেখানে এমন বিষয়টি সত্যি ভাব্বার সময় হয়েছে। বই পড়া, ছবি আকা, খেলাধুলা অংশগ্রহন হয়ে উঠতে পারে মোবাইল আসক্তি দুরের উপায়। যে বই পড়ে, সেই সমাজ গড়ে।”
আব্দুল্লাহ মজনু/দীপ্ত নিউজ