তৃতীয় দফা বন্যার কবলে পড়েছে সিলেট। ভারি বর্ষণ এবং ভারত থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে সুরমা, কুশিয়ারা, পিয়াইন, গোয়াইন, ধলাইসহ সবগুলো নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
সোমবার (১ জুলাই) সিলেটে দিনভর প্রবল বৃষ্টিপাত হয়েছে। সেই সঙ্গে সিলেটের উজানে অবস্থিত ভারতের চেরাপুঞ্জিতে হয়েছে অতিপ্রবল বৃষ্টিপাত। যেকারণে সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি দ্রুত অবনতির আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সুরমা নদীর পানি সিলেটের সীমান্তবর্তী কানাইঘাটে বিপৎসীমার ৯৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সীমান্তবর্তী কানাইঘাট, জকিগঞ্জ, কোম্পানীগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হচ্ছে। এই তিন উপজেলাসহ পুরো সিলেট জেলার নিম্নাঞ্চল আগে থেকেই প্লাবিত। এখন নতুন করে পানি বৃদ্ধিতে বন্যাকবলিতদের দুর্ভোগ–ভোগান্তি আরও বাড়বে।
সিলেট জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, রবিবার পর্যন্ত জেলায় পানিবন্দি রয়েছেন ৭ লাখ ৩৬ হাজার ৬ জন। ২১৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন ১০ হাজার ৭১৩ জন। তবে সিলেট সিটি করপোরেশন ও সদর উপজেলায় আশ্রয়কেন্দ্রে লোকজন নেই।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, সোমবার সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ৯৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদীর পানি জকিগঞ্জের আমলশিদ পয়েন্ট বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার ও ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৮৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সারি নদীর পানি সারিঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ জানান, গত ৪৮ ঘণ্টায় ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ৪৯৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। সিলেটেও বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এভাবে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে আবার পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাবে। সিলেটের নদ–নদীগুলোর পানি বেড়ছে।
গত ২৭ মে থেকে প্রথম দফা বন্যা দেখা দেয়। দুই সপ্তাহব্যাপী স্থায়ী এ বন্যায় পানিবন্দী ছিলেন ১০ লাখেরও বেশি মানুষ। প্রথম বন্যার পানি পুরোপুরি নামার আগেই গত ১৫ জুন থেকে ফের বন্যা কবলিত হয় সিলেট। সপ্তাহখানেক পর বন্যার পানি কিছুটা কমছিল। তবে রবিবার (৩০ জুন) থেকে ফের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি শুরু হয়।