ঢাকাই সিনেমার চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস। একটা সময় তিনি ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষ নায়িকা হিসেবে ব্যস্ত সময় পার করেছেন। মাঝে কিছুটা বিরতি দিয়ে এখন আবারও সিনেমায় নিয়মিত হয়েছেন। অভিনয়ের পাশাপাশি সরব আছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
সম্প্রতি ইউটিউব আইডি হ্যাকের অভিযোগ এনে এই নায়িকার নামে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন চলচ্চিত্র প্রযোজক সিমি ইসলাম কলি। অপু ছাড়াও বিবাদী করা হয়েছে জাহিদুল ইসলাম অপু নামে আরেকজনকে। বিষয়টি নিয়ে এতদিন চুপ থাকলেও এবার মুখ খুললেন অপু বিশ্বাস। গণমাধ্যমে জানালেন, তার চ্যানেলের কনটেন্ট চুরি করে তারই বিরুদ্ধে জিডি করা হয়েছে।
অপু বিশ্বাস বলেন, আবেদনকারী তো আমার যোগ্যই নয়। তার সম্পর্কে কী বলব? আমার অ্যাডমিনের যোগ্যতার কাতারে সে। তাই আমার অ্যাডমিনই বিষয়টি দেখছেন। আমার চ্যানেলের কনটেন্ট চুরি করে তিনিই আবার আমাদের বিরুদ্ধে জিডি করেন। এটি হাস্যকর। তার চ্যানেল তো সাসপেন্ড করেছে ইউটিউব কর্তৃপক্ষ। এখানে আমাদের কী?
অভিনেত্রীর ইউটিউব চ্যানেলের অ্যাডমিন জাহিদুল ইসলাম জানান, ‘অপু বিশ্বাস’ ও ‘অপু বিশ্বাস অফিশিয়াল’ চ্যানেল দুটি থেকে দুটি কনটেন্ট হুবহু প্রচার করা হচ্ছে ‘এসকে ফিল্মস ইন্টারন্যাশনাল’ নামের একটি চ্যানেল থেকে। মাস দেড়েক আগের ঘটনা এটি। তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন চ্যানেলটি সিমি ইসলাম কলির।
জাহিদুল ইসলাম বলেন, যেহেতু আমাদের চ্যানেলের কনটেন্ট আমি নিয়ম করে একটা স্ট্রাইক মারি। এর তিন–চার দিন পর দেখি, আরও তিন–চারটি ভিডিও তার চ্যানেলে চালাচ্ছে। পরে আমি আরও স্ট্রাইক মারি। এরপর ইউটিউব টিম যাচাই–বাছাই করে ওনার চ্যানেল থেকে আমার ভিডিওগুলো সরিয়ে ফেলে।
এরপর থেকেই কলি ফোন করে হুমকিসহ বাজে আচরণ করছেন বলে জানান জাহিদুল ইসলাম। সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় জিডি করেন কলি। জিডি নম্বর–১১১৫।
জিডিতে উল্লেখ করা হয়, এই মর্মে জানাচ্ছি যে, আমি ২০১৬ সালের জুনে ‘Hi sk Films int ও SKfilmsint 7712’ খুলি। বিবাদী অপু বিশ্বাস (৩৫) ও জাহিদুল ইসলাম অপু (৩০) গত ২৯ আগস্ট আনুমানিক ৭টায় আমার ইউটিউব চ্যানেল হ্যাক করেন। এরপর ৩১ আগস্ট সকাল ৮টার সময় ২ নম্বর বিবাদী ১ নম্বর বিবাদীর সঙ্গে কথা বলিয়ে দেবে বলে জানান।
আরও উল্লেখ করা হয়, পরে ২ নম্বর বিবাদীর সঙ্গে মোবাইলে কথা বললে এক লাখ টাকা দাবি করেন। এ টাকা দিলে আমার ইউটিউব চ্যানেল দিয়ে দেবে, টাকা না দিলে ফেরত দেবে না বলে বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি প্রদান করেন। বিষয়টি সাইবার ক্রাইম শাখায় কথা বলে সাধারণ ডায়েরি করা হলো।
প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালে আমজাদ হোসেনের ‘কাল সকালে’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পা রাখেন অপু। এরপর ২০০৬ সালে পরিচালক এফ আই মানিক পরিচালিত ‘কোটি টাকার কাবিন’ ছবিতে নায়িকা হিসেবে শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয় করেন তিনি। ছবিটি বক্স অফিস কাঁপানো ব্যবসা করায় অপু বিশ্বাস রাতারাতি তারকায় পরিণত হন।
তারপর শাকিব খানের সঙ্গে তার জুটি দর্শকদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়। ‘কোটি টাকার কাবিন’ ছবির পর শাকিব–অপু জুটির একই নির্মাতার ‘পিতার আসন’, ‘চাচ্চু’, ‘দাদিমা’ ছবিগুলোও ব্যবসা সফল হয়।
এরপর অপু ছুটতে থাকেন রেসের ঘোড়ার মতো। ‘মিয়াবাড়ির চাকর’, ‘তোমার জন্য মরতে পারি’, ‘কথা দাও সাথী হবে’, ‘মনে প্রাণে আছো তুমি’, ‘জন্ম তোমার জন্য’, ‘মায়ের হাতে বেহেশতের চাবি’, ‘তুমি স্বপ্ন তুমি সাধনা’ ছাড়াও অসংখ্য ছবি সুপারহিট ব্যবসা করে। মজার ব্যাপার হলো, অপু বিশ্বাস অভিনীত শতকরা ৯৫ ভাগ ছবির নায়ক শাকিব খান।
শায়লা/দীপ্ত নিউজ