ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন সিয়াম মো. আরাফাত নামে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মীর মশাররফ হোসেন হলের নিজ কক্ষ তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
সিয়ামের গ্রামের বাড়ি নীলফামারী জেলার চিলাহাটি এলাকায়। তিনি পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বিকেল থেকে তার রুম ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। মাগরিবের পরও রুম বন্ধ দেখে একজন রুমে ধাক্কা দেন, বন্ধ পেয়ে জানালা দিয়ে উঁকি দিলে তার ঝুলন্ত দেহ দেখা যায়। পরবর্তীতে দরজা ভেঙে তাকে বের করে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ওবায়দুর রহমান বলেন, হলের শিক্ষার্থীরা সিয়ামকে তার কক্ষে (১১৫/বি) ঝুলন্ত অবস্থায় পেয়ে মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে আমি মেডিকেলে আসলে জানতে পারি সে মারা গেছে।
মেডিকেল সেন্টারের দায়িত্বরত চিকিৎসক বীরেন্দ্র কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘সন্ধ্যা ৭টার দিকে সিয়ামকে মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়। আমরা পরীক্ষা করে দেখি, তিনি আগেই মারা গেছে।’
সিয়াম আত্মহত্যা করার আগে সোমবার রাত ৪টা ২৫ মিনিটে তার ফেসবুক ওয়ালে একটি পোস্ট দেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘আমার সকল জিজ্ঞাসা আজ পথ পেয়েছে। সবকিছুর উত্তর পেয়েছি। এটা স্বর্গীয় মুহূর্ত, যা আমি আগে কখনো পরখ করিনি। কোন শব্দ দিয়ে তা বর্ণনা করা যাবে না।… সমগ্র জীবনে একটা প্রশ্নই আমাকে তাড়া করতো। জীবনের মানে কী? আমি আমার সমগ্র জীবন জুড়ে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছি। আমি প্রায় সম্ভাব্য সব বই পড়েছি।….কিন্তু একটা বিষয় জানা জরুরি যে, কেউ তোমাকে এটা শেখাতে পারবে না।….জীবনকে বুঝতে হলে তোমাকে আগে মৃত্যুকে বুঝতে হবে। এটা সবকিছুর পরিসমাপ্তি।…যখনই তুমি মৃত্যুকে বুঝতে পারবে তখই তুমি জীবনের উদ্দেশ্য জানতে পারবে।‘
হলের তার সহপাঠীদের ভাষ্যমতে, সিয়াম বেশ কিছুদিন ধরে মেডিটেশন করছিলেন। তার রুম থেকে সদগুরুর ‘ডেথ: অ্যান ইনসাইড স্টোরি‘ বইটি পাওয়া যায়।
এমবিআর/দীপ্ত সংবাদ