নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মেঘনা নদীর চানপুরে ২০টির বেশি চুম্বুক ড্রেজার, শত–শত বালুবাহি বাল্কহেড, নিয়মিত উত্তোলন আর অবাধে বালু বিক্রির এই বিশাল আয়োজন । অথচ রায়পুরায় চলতি বছরে কোন বালু মহালের ইজারা দেয়নি প্রশাসন।
পার্শবর্তী ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ইজারা নিয়ে প্রশাসন আর জনগণকে ফাঁকি দিয়ে দিনে–রাতে অবাধে চলছে এই কার্যক্রম। ফলে নদী ভাঙ্গনের হুমকির মুখে জেলার বেশ কিছু অঞ্চল।
প্রতি বছরের মতো এবারও বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকেই নরসিংদীর রায়পুরার মেঘনা নদীতে দেখা দিয়েছে ভাঙ্গন। এতে নদী গর্ভেবিলীন হতে যাচ্ছে উপজেলার বেশ কিছু অঞ্চলের শত শত বাড়ি–ঘর, ফসলী জমি, স্কুল–মাদ্রাসা কবরস্থানসহ গুরুত্বপূর্ন স্থাপনা। এসব কথা বিবেচনায় গত তিন বছর ধরে এই অঞ্চলে কোন বালু মহাল ইজারা দিচ্ছেনা প্রশাসন। তবে পার্শবর্তী জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ইজারা নিয়ে দুপারের বালু খেকুদের গোগসাজোশে নরসিংদীর সীামানায় এসে দিনে ও রাতের আধারে অবাধে চলছে বালু উত্তোলন। শতশত বিঘা ফসলী জমি ও ঘর–বাড়ি রক্ষায় প্রশাসন নজরদারী রাখলেও তা পর্যাপ্ত নয়।
তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, নরসিংদী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় নিয়মিত চলছে বালু উত্তোলন। এলাকাবাসী বাঁধা দিতে গেলে তাদের উপর চলে মামলা–হামলার হুমকীসহ নির্যাতন। এভাবে বালু উত্তোলননের ফলে ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ রায়পুরা উপজেলার চানপুর, কালিকাপুর, মাঝেরচর, সাহেরখোলা, চর কেদেরখোলাসহ বেশ কিছু অঞ্চল রয়েছে চরম ভাঙ্গন হুমকীতে।
এ বিষয়ে কথা বলতে দফায় দফায় যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি অভিযুক্ত বালু খেকোদের। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা জানান, নিষিদ্ধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন কাম্য নয়। নরসিংদীর অংশ রক্ষায় নজরদারীর পাশাপাশি জেলা প্রশাসনকে লিখিত ও ব্যক্তিগতভাবে জানানো হচ্ছে।
এদিকে জেলা প্রশাসক জানান,এলাকাবাসীর দাবীর প্রেক্ষিতে খবর নিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জরিমানাসহ বালু উত্তোলন বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়টি নজরে রাখার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
রায়পুরার চরাঞ্চলের লাখো মানুষের বসতিসহ ফসলী জমি রক্ষায় নদী ভাঙ্গন রোধে নরসিংদী অংশে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী এলাকাবাসীর।
মোরশেদ আলম/দীপ্ত নিউজ