সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের আনুষ্ঠানিক আলোচনা ফেব্রুয়ারি মাসে শুরু হবে। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বিকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল ও পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
ব্রিফিংয়ে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় চারটি সংস্কার কমিশনের প্রধান ও সদস্যরা রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দেন। এই চার কমিশন হলো– সংবিধান সংস্কার, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার, দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার ও পুলিশ প্রশাসন সংস্কার। প্রতিবেদন জমাদানের পরই সংবাদ ব্রিফিং আয়োজন করা হয়।
সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, কমিশনগুলোর প্রাথমিক সুপারিশ নিয়ে সমন্বয়সহ আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করতে এক মাস সময় প্রয়োজন। তবে জানুয়ারির মধ্যেই এই চারটি কমিশনের পাশাপাশি বিচার বিভাগ সংস্কার ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘যদি কমিশনগুলোর কাজ নির্ধারিত সময়ের আগে শেষ হয়, তবে আলোচনা ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই শুরু হতে পারে।‘
পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যেই কিছু রাজনৈতিক দল লিখিত মতামত প্রদান করেছে।
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে যেসব সুপারিশ নিয়ে ঐকমত্য তৈরি হবে, সেগুলো বাস্তবায়নের রূপরেখা নির্ধারণ করা হবে।
জুলাই মাসের গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন খাতে সংস্কারের লক্ষ্যে দুই ধাপে মোট ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করে। এর মধ্যে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার, পুলিশ প্রশাসন সংস্কার, বিচার বিভাগ সংস্কার, দুর্নীতি দমন সংস্কার, জনপ্রশাসন সংস্কার ও সংবিধান সংস্কার কমিশন গঠিত হয় গত বছরের অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে।
বিচার বিভাগ ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রতিবেদন জমা দেয়ার সময়সীমা বাড়ানো হলেও বাকি চারটি কমিশন তাদের প্রতিবেদন নির্ধারিত সময়ে জমা দিয়েছে। কমিশনগুলোর সুপারিশ নিয়ে সরকারের তরফ থেকে আগেই জানানো হয়েছে, আলোচনার মধ্য দিয়ে গ্রহণযোগ্য প্রস্তাব বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেয়া হবে।
জানা গেছে, সুপারিশগুলো কীভাবে এবং কোন প্রক্রিয়ায় বাস্তবায়ন করা হবে, তার একটি প্রাথমিক রূপরেখা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে চূড়ান্ত করা হবে। আলোচনার মাধ্যমে গৃহীত প্রস্তাবগুলো দেশের বিভিন্ন খাতের সংস্কার কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।