প্রথম ধাপের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরিক্ষায় গাইবান্ধায় ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ও মোবাইলের মাধ্যমে অবৈধভাবে পরীক্ষা দেয়ার অভিযোগে ৩৭ জনকে আটক করা হয়েছে। আটকদের মধ্যে জালিয়াতি চক্রের পাঁচ হোতা ও ৩২ জন পরীক্ষার্থী রয়েছে।
শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে গাইবান্ধা সদরের বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে তাদের আটক করে র্যাব–১৩ গাইবান্ধা ক্যাম্পের সদস্যরা।
র্যাব জানায়, আটককৃদের কাছ থেকে ২২টি ইলেকট্রনিক ডিভাইস সংযুক্ত মাস্টারকার্ড, ১৯টি ব্লুটুথ ডিভাইস ও ১৬টি মোবাইল ফোন এবং ব্যাংকের চেক উদ্ধার করা হয়। পরীক্ষা চলাকালীন অভিনব উপায়ে তৈরি মাস্টারকার্ডের মধ্যে ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস সংযুক্ত করে জালিয়াতির সময় চক্রের পাঁচ হোতাকে ও ৩২ পরীক্ষার্থীসহ মোট ৩৭ জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে ২৩ জন নারী ও ১৪ জন পুরুষ।
শুক্রবার বিকেলে গাইবান্ধা র্যাব ক্যাম্পে এ নিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন র্যাব–১৩ গাইবান্ধা ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি জানান, গ্রেফতারকৃত পরীক্ষার্থী বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস এবং মোবাইলের মাধ্যমে সুকৌশলে পরীক্ষা দিয়ে আসছিল। মারুফ, মুন্না, সোহেল, নজরুল ও সোহাগ বিভিন্ন পরীক্ষার্থীকে ১৪–১৮ লক্ষ টাকায় চাকুরী দেওয়ার প্রলোভন দিয়ে আসছিল। সোহেল ডিভাইস সংগ্রহ ও বিতরণ করেন, নজরুল পরীক্ষার্থী সংগ্রহ করতেন এবং মারুফ ও মুন্না বাহির থেকে প্রশ্নপত্র সমাধান করে পরীক্ষার্থীদের কাছে সরবরাহ করেন।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, একটি চক্র বিশেষ ইলেকক্ট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের উত্তর পৌছে দেয়ার চুক্তিতে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেয়। পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা–কর্মচারীদের পাশাপাশি এই চক্রের মুলহোতাদের আইনের আওতায় আনতে না পারলে মেধাবীরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, তেমনি মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব হবেনা মনে করেন সচেতন মহল।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, গাইবান্ধার সাত উপজেলায় সহকারী শিক্ষক পদে প্রায় ৭০০টি শূন্য পদের বিপরীতে ৩০ হাজার ৮৮ জন চাকরি প্রত্যাশী আবেদন করেন। শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মোট ৪৭টি কেন্দ্রে ৭৫ মার্কের (এমসিকিউ) নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ
সহকারি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এস.এম আরশাদ জানান, ৩০ হাজার ৮৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে অনুপস্থিত ছিলেন ৭ হাজার ২শ ৭৫ জন পরীক্ষার্থী। অসদুপায় অবলম্বন করায় বিভিন্ন কেন্দ্রে ৩৬ পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়।
ভবতোষ রায় মনা/মোরশেদ আলম/দীপ্ত নিউজ