দিনাজপুরের পুলহাট এলাকায় কয়েকটি অটোরাইস মিলে পলিথিনের বস্তা ব্যবহারের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারকের উপর মামলার ঘটনায় চার দিনেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ ফরিদ হোসেন বলেন গত সোমবার সদরের পুলহাট মোমেনা অটো রাইস মিলের ভ্রম্যমান আদালত অভিযান পরিচালনা করেন । এ সময় নিবার্হী ম্যাজিষ্ট্রেট লিজা রিছিল অভিযান পরিচালনাকালে হামলার শিকার হয়েছিলেন।
হামলার ঘটনায় ওইদিন রাতেই দিনাজপুর পাট উন্নয়ন উন্নয়ন কর্মকর্তা দিলীপ কুমার মালাকার বাদি হয়ে কোতোয়ালী থানায় সরকারি কাজে বাঁধা প্রদান, গাড়ি ভাঙচুর ও সরকারি কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করার অপরাধে একটি মামলা দায়ের করেছেন। ৪দিন অতিবাহিত হলেও এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
কোতয়ালী থানার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ–পুলিশ পরিদর্শক শামীম হক জানান, হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
হামলার ঘটনায় আসামী করা হয়েছে, মোমেনা অটো রাইস মিলের স্বত্ত্বাধিকারী মোকছেদ আলী(৪৫), একই মিলের ব্যবস্থাপক রাকিব হোসেন(২৮), মোমেনা ইন্ডাস্ট্রি অটো ডায়ারের ব্যবস্থাপক শাহীন আলম(৩০) সহ মামলায় ৩০–৪০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী দেখানো হয়েছে।
মামলার এজাহারসূত্রে জানা যায়, গত সোমবার বিকেলে দিনাজপুর পুলহাট এলাকায় পণ্যে পাটের মোড়ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে অভিযান পরিচালনা করতে যান সহকারি কমিশনার লিজা রিছিল। এসময় অভিযানে তাঁর সাথে ছিলেন অফিসের কর্মচারী, পাট অধিদপ্তরের কর্মকর্তাসহ পুলিশ সদস্যরা।
লিজা রিছিল প্রথমে মোমেনা অটো রাইস মিলে যান। সেখানে প্লাস্টিকের বস্তায় মোড়ক অবস্থায় ৩৫০বস্তা চাল পান। মিল মালিককে তিনি ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। পরে পার্শ্ববর্তী মোমেনা ইন্ডাস্ট্রি অটো ডায়ারে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন। সেখানেও ১ হাজার প্লাস্টিকের বস্তায় মোড়ক অবস্থায় পান। সেখানেও ৪০ হাজার টাকা জরিমানা ধায্য করেন। উভয় মিলে জরিমানার অর্থ আদায় করে চলে যাবার সময় এজাহারনামীয় আসামী ও অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাদের উপরে হামলা করেন। সহকারি কমিশনারের গাড়ির সামনের কাঁচ ভাঙচুর করেন। অভিযানে থাকা পুলিশ সদস্য ও অন্যান্যদের উপরে ইট পাটকেল ছুঁড়ে মারেন।
মামলার বাদি দিলীপ কুমার মালাকার বলেন, পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন–২০১০ এ ১৯টি পণ্যে পাটের মোড়ক ব্যবহার বাধ্যতামুলক করা হয়েছে। আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছি। গত সোমবার বিকেলে অভিযানের অংশ হিসেবে পুলহাট এলাকায় গিয়ে কয়েকটি মিলে অভিযানে যাই। দুই মিল মালিককে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামুলক ব্যবহার আইন ২০১০ এর ১৪ নাম্বার ধারা অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ। জরিমানা আদায় করে চলে আসার সময় অতর্কিত হামলার শিকার হয়েছি।
মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে কতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো. ফরিদ হোসেন বলেন, মামলার পর থেকে আসামীরা পলাতক আছেন। আমরা তাদেরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।
সুলতান মাহমুদ/মোরশেদ আলম/দীপ্ত নিউজ