মুহুরী নদীতে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবাধে বালু উত্তোলনের ফলে ফেনীর ফুলগাজী উপজেলায় ভেঙ্গে পড়েছে মার্কেট। হুমকির মুখে রয়েছে বাজারের শ্রীপুর সড়কটি। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে উপজেলা যুবলীগ সভাপতি সালেহ আহম্মদ মিন্টু ও সাধারণ সম্পাদক একরাম পাটোয়ারী বালু উত্তোলনের মহোৎসব চালাচ্ছে। এনিয়ে ব্যবসায়ীসহ স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ–অসন্তোষ বিরাজ করছে।
স্থানীয় সূত্র ও ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ফুলগাজী বাজারের বিলোনীয়া রেললাইনের পাশে শ্রীপুর সড়কে আনোয়ার শপিং সেন্টার। ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে দিবারাত্রি বালু তোলার কারণে ওই মার্কেটের পেছনের অংশে মাটি সরে যায়। ১২টি দোকান কক্ষের ওই মার্কেট এবং এর পাশেই আবদুল কুদ্দুসের দুটি, আইয়ুবের দুটি দোকানঘর ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়লে আতংক দেখা দেয়। একপর্যায়ে দোকানগুলো অন্যত্র সরিয়ে নিতে বাধ্য হয় মালিকরা।
সূত্র আরো জানায়, রেললাইনের পাশ ঘেষে বসানো হয় ড্রেজার মেশিন। তার পাশেই নদীর মধ্যবর্তী স্থানসহ তৎসংলগ্ন স্থানে আরও ৩ টি ড্রেজার মেশিনে তোলা হচ্ছিল বালু।
বুধবার (২২ নভেম্বর) সকাল থেকে বাজারের ব্যবসায়ীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠলে বালু উত্তোলনে জড়িতরা ড্রেজার মেশিন সরিয়ে নেয়। খবর পেয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল আলিম ও আনন্দপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হারুন মজুমদার ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
আনোয়ার শপিং সেন্টারের মালিক আনোয়ারুল আজিম সোহেল জানান, দুই যুবলীগ নেতা মিন্টু ও একরাম নদীতে ২শ থেকে আড়াইশ ফুট গভীর থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু তোলার কারণে মার্কেটটি ভেঙ্গে গেছে। এতে প্রায় ২ কোটি টাকা ক্ষতির পাশাপাশি দোকান ও জায়গা দুটোই হারাতে হয়েছে। বাজারের ভিতর ও রেললাইনের পাশ থেকে বালু তোলার নিয়ম না থাকলেও তারা দীর্ঘদিন বালু তোলে। এভাবে চলতে থাকলে শ্রীপুর রাস্তাটিও নদীতে চলে যাবে।
এ ব্যাপারে ফুলগাজী উপজেলা যুবলীগ সভাপতি সালেহ আহম্মদ মিন্টুর বক্তব্য জানতে মুঠোফোনে কল দিলে বলেন, তিনি মিটিং এ আছেন। তবে অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে কথা বলতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও ফারদিস হোসেন জানান, নদীর মাঝ থেকে বালু উত্তোলন করায় ঝুঁকি হতে পারে। পানির লেভেল পরিমাপ করে বালু কোথা থেকে উত্তোলন করা হয়েছে সেটি নিশ্চিত হওয়া যাবে। পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলীসহ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হবে।
ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানিয়া ভূঁইয়া জানান, বালু উত্তোলনের কারণে মার্কেট ভেঙ্গে পড়ার খবর তিনি পেয়েছেন। সাময়িকভাবে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন রোধের ব্যবস্থা করা হবে।
প্রশাসন জেনেও অভিযুক্ত ক্ষমতাসীন দলের বালুখেকোদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন ভূক্তভোগীরা।
মোরশেদ আলম/দীপ্ত নিউজ