কুমিল্লার হোমনায় নিখোঁজের তিন দিন পর এক মাদ্রাসাছাত্রের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সোমবার (১৬ অক্টোবর) সকালে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে খবর পেয়ে উপজেলার ঘাগটিয়া ইউনিয়নের আলীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন ডোবার কচুরিপানার নিচ থেকে নিখোঁজ মো. সজিব (১৩) নামের ওই মাদ্রাসাছাত্রের অর্ধগলিত লাশটি উদ্ধার করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সে আলীপুর ক্বাদেরিয়া হাফেজিয়া সুন্নী মাদ্রাসার নূরানী বিভাগের ছাত্র ছিল। নিহত সজিব একই উপজেলার আছাদপুর ইউনিয়নের ঘনিয়ারচর গ্রামের মো. গোলাম মোস্তফার ছেলে। এ ঘটনায় মাদ্রাসার পরিচালক (মোহতামি) মো. ইয়াছিন ও শিক্ষক রুবেলকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।
গত ১২ অক্টোবর বৃহস্পতিবার মাদরাসা থেকে নিখোঁজ হয়েছিল সজিব। পরদিন ১৩ অক্টোবর রাতে ওই মাদ্রাসার পরিচালক (মোহতামিম) মো. ইয়াসিন নিহত সজীবের নিখোঁজের বিষয়টি হোমনা থানায় লিখিতভাবে জানিয়েছিলেন।
নিখোঁজের তিনদিন পর মাদ্রাসাছাত্র সজীবের লাশ উদ্ধারের সঙ্গে সঙ্গে মাদ্রাসার পরিচালক মো. ইয়াসিন ও আরেক শিক্ষক মো. রুবেলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
নিহতের মা পারুল আক্তার জানান, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় তার ছেলের সঙ্গে কথা বলার জন্য মাদ্রাসার পরিচালক (মোহতামিম) মো. ইয়াছিনের মোবাইলে ফোন করেন। তখন মোহতামিম ইয়াছিন তাকে সেখানে সজিবের না থাকা এবং পরবর্তী শনিবার থেকে মাদ্রাসায় ছুটি শুরু হওয়া ও সজিবও সকাল ছয়টায় বাড়ি চলে যাওয়ার বিষয়টি জানান। সকাল ছয়টা থেকে দশটা পর্যন্ত ছেলের জন্য অপেক্ষা করেন মা। না পেয়ে মোহতামিম ইয়াছিনের মোবাইলে আবারও ফোন করেন তিনি। কিন্তু কোনো সদুত্তর পাননি। মোহতামিম ইয়াছিন নিজেই বাদী হয়ে সজিব নিখোঁজ হয়েছে মর্মে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। এরপর থেকে মোহতামিম ইয়াছিনের কাছে ছেলের খোঁজ জানতে চাইলে কখনও সোনারামপুর, কখনও এখানে সেখানে থাকার কথা জানান। মোহতামিমের কথা মতো সব জায়গায় সজিবকে খোঁজা হয়েছিল।
অবশেষে ছেলের লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে বাবা গোলাম মোস্তফা থানা প্রাঙ্গণেই অজ্ঞান হয়ে পড়েন। মায়ের আহাজারিতে পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে। জানা যায়, নিহত সজিব দুই ভাই দুই বোনের মধ্যে সবার ছোট ছিল।
হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.জয়নাল আবেদিন বলেন, খবর পেয়ে ডোবা থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যায়নি। মাদ্রাসার মোহতামি মো. ইয়াছিন ও সহকারি শিক্ষক রুবেলকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে মামলা প্রক্রিয়াধীন।
হোমনা সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার মীর মহসীন মাসুদ রানা বলেন, মাদ্রাসাছাত্র সজীবের মৃত্যু রহস্য উদঘাটনে আমরা কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। পোস্টমর্টেম রিপোর্ট এলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।
শাকিল মোল্লা/ আল/ দীপ্ত সংবাদ