গাজীপুর সিটি করপোরেশন এর কোনাবাড়ী জরুন এলাকায় শ্রমিক ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত আরও এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো.বাচ্চু মিয়া ।
নিহত হলেন মো. জালাল উদ্দিন (৪০)। তিনি নেত্রকোনার কেনদুয়া উপজেলার বামহাটি গ্রামের চাঁন মিয়ার ছেলে। সে জরুন এলাকার ইসলাম গ্রুপের সুইং সুপপারভাইজার হিসাবে কর্মরত ছিলেন। জালাল উদ্দিন সপরিবারে গাজীপুরের জরুন এলাকার ফজল মোল্লার বাড়িতে ভাড়া থেকে ওই কারখানায় কাজ করতেন। নিহতের চাঁচাতো বোন বিউটি বেগম বলেন,গত বুধবার সকাল সাড়ে ৭ টা সময় আমার ভাই প্রতিদিনের ন্যায় অফিসে যায়। মূল ফটকে যাওয়ার পরেই শুনে কারখানা বন্ধ। তিনি বলেন,পরে আশেপাশের আরো কয়েকটি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। আমার ভাই বাসায় আসার পথে জরুন বাজারের মোড়ে আসলে পুলিশ অতর্কিত গুলি করতে থাকে। সেই গুলি আমার ভাই এর পেটে লাগলে সাথে সাথে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে তার সহকর্মীরা স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নিহতের খালু পারভেজ বলেন,আমরা এখনো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আছি। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে গেছে। ময়না তদন্ত শেষ হলে গ্রামের বাড়ী নেত্রকোনায় নিয়ে যাবো। সেখানেই দাফন করা হবে তাকে। তিনি আরো বলেন,চোখের সামনে ছেলেটিকে শেষ হতে দেখেছি। কিভাবে ভুলবো এসব স্মৃতি,তার ৯ বছরের জান্নাতুল বাকিয়া মরিয়ম নামে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তার স্ত্রী কানতে কানতে অজ্ঞান হয়ে পড়ছে।
কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম আশরাফ উদ্দিন বলেন, আমরা শুনেছি তিনি মারা গেছেন। তবে এখনও নিশ্চিত নই। থানা থেকে একজন অফিসারকে ঢাকার পাঠানো হয়েছে। তিনি পৌছালে বিস্তারিত জানা যাবে।
উল্লেখ গত (৮ নভেম্বর) জরুন এলাকায় ইসলাম গ্রুপের তিনটি কারখানার শ্রমিকরা বেতন বাড়ানোর দাবিতে বিক্ষোভ ও ভাংচুর শুরু করে। পরে পুলিশ তাদের নিয়ন্ত্রন করতে গেলে শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ করে ইটপাটলে ছুড়তে থাকে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করতে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়ে। এতে শ্রমিকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। ওই ঘটনায় অন্তত ১০ জন শ্রমিক আহত হয়। আহতদের মধ্যে দুইজনকে মুমুর্ষ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থান আঞ্জুয়ারা খাতুন (৩০) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়। একই ঘটনায় আহত জালাল উদ্দিন ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিল। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
আল/ দীপ্ত সংবাদ