চুয়াডাঙ্গায় ছাত্রলীগ নেতা শহিদুজ্জমান বিপ্লবের হয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্নাস চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষায় প্রক্সি দেওয়ার অপরাধে এক ভুয়া পরীক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। পরে তাকে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
সোমবার (১ জুলাই) চুয়াডাঙ্গা সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজ কেন্দ্রে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই তাকে আটক করা হয়।
টানা ৮ দিন প্রক্সি দেওয়ার পর ৯তম পরীক্ষার দিনে জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সনাক্ত হয় ওই ভুয়া পরীক্ষার্থী।
দণ্ডপ্রাপ্ত শামীম আহম্মেদ তুষার জীবননগর উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের খোকনের পুত্র এবং যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অর্নাস তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।
জানা গেছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনার্স চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা গ্রহণের কেন্দ্র চুয়াডাঙ্গা সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজে। এই কেন্দ্রে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। এ পরীক্ষায় অংশ নেয় চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও জীবননগর উপজেলার আবুুল কাশেমের ছেলে শহীদুজ্জামান বিপ্লব। তার রোল নং ২০২৮১৭৭ ও নিবন্ধন নং ১৮২১৫০৩৯৪২৬। একইসাথে তিনি জীবননগর ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক।
কিন্তু তার পরিবর্তে আগের টানা আটটি পরীক্ষাসহ সোমবারে অনুষ্ঠিতব্য পরীক্ষাটিও দিচ্ছিলেন ভুয়া পরীক্ষার্থী শামীম আহম্মেদ তুষার।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিষয়টি জেলা প্রশাসনের নজরে আসে। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে পরীক্ষার হলে উপস্থিত হন জেলা কালেক্টরেটের সহকারি কমিশনার (শিক্ষা ও আইসিটি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুমাইয়া জাহান নাঈমা। সেখানে তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে পাবলিক পরীক্ষাসমূহ (অপরাধ) আইন, ১৯৮০–এর ৩ ধারা অনুযায়ী ভুয়া পরীক্ষার্থীকে এক বছরের জেল প্রদান করেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও সহকারী কমিশনার সুমাইয়া জাহান নাঈমা বলেন, ‘তাৎক্ষণিকভাবে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় ভুয়া পরীক্ষার্থীকে জেল–জরিমানা করা হয়েছে। আর যিনি প্রকৃত পরীক্ষার্থী তাঁকেও শনাক্ত করা হয়েছে। তাঁর ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ কলেজ কৃতর্পক্ষ নিবেন।’
তিনি আরও জানান, গোপন খবর পেয়ে আমরা তাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি প্রথমে অস্বীকার করেন। তার কথাও প্রথম দিকে দৃঢ় কণ্ঠে ছিলো। পরিক্ষার্থীর পিতার নাম্বার চাওয়া হলে, ভুয়া পরীক্ষার্থী আসল পরীক্ষার্থীর নাম্বার প্রদান করেন। তার সাথে কথা বলেই আরও বেশি সন্দেহ হয়। তিনি যে ওই পরীক্ষার্থীর পিতা নন, সেটি কথা শুনেই স্পষ্ট মনে হচ্ছিলো। তারপর ভালোভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করায় দুজনের কথার মিল পাওয়া যায়না। পরবর্তীতে ভুয়া পরীক্ষার্থী স্বীকার করেন। এছাড়াও তার কাছে একটি মুঠোফোনও পাওয়া যায়।
জান্নাতুল / আল/ দীপ্ত সংবাদ