শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪
শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪

অধিগ্রহনের ক্ষতিপুরন বাড়াতে রাতারাতি বাড়িঘর নির্মাণ

Avatar photoদীপ্ত নিউজ ডেস্ক

প্রায় ২০ফুট লম্বা ১৪ফুট চওড়া একটা দোচালা টিনের ঘর, থাকার জন্য। আরেকটি ঘর প্রায় ১২ ফুট লম্বা চওড়ায় ১০ফুট। এটা রান্না ঘর। আর চার বাই চার ফুটের একটা ল্যাট্রিন। এই নিয়ে একটি বসত বাড়ি। মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলা উত্তর কাউন্নারা গ্রামে চল্লিশ ডিসেমেল নিচু ফসলি (নাল) জমির ওপর এমন পাঁচটি বাড়ি।

সদ্যই নির্মিত এই প্রতিটি বাড়ির সামনে লাগানো হয়েছে নারকেল, পেয়ারা,আমসহ বিভিন্ন ফল আর সবজি চারা। তবে কোন বাড়িতেই মানুষজন থাকেনা। দেখে মনে হতে পারে আদর্শ বাড়ির প্রদর্শনি হচ্ছে। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানাগেল এটা আসলে অধিগ্রহণকৃত জমির অতিরিক্ত মুল্য পেতে একধরনে প্রতারণার চেস্টা।

ঢাকাআরিচা মহাসড়কের ঢাকার  ধামরাই উপজেলার কালামপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলা হয়ে টাংগাইল পর্যন্ত আঞ্চলিক মহাসড়কটির প্রসস্তকরণ উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছে সড়ক জনপদ বিভাগ। জন্য জমি অধিগ্রহণের পক্রিয়া চলছে। অধিগ্রাহণকৃত জমির মুল্য বাড়াতে এভাবেই নাল জমিকে ভিটি জমি হিসাবে দেখানোর জন্য  রাতারাতি বসত বাড়ি তৈরি করা হচ্ছে। কেবল কাউন্নারা গ্রামরে এই অংশটিই নয়। সাটুরিয়া উপজেলার যে যে অংশ আঞ্চলিক মহাসড়কের জন্য জমি অধিগ্রহনের পক্রিয়া চলছে এমন অনেক স্থানেই এভাবে বাড়িঘর তোলা হচ্ছে। জানা গেছে ,একটি দালাল চক্র এভাবে প্রতারণার জন্য অধিগ্রাহণের আওতায় জমির মালিকদের  বিভিন্ন ভাবে পরামর্শ দিচ্ছে। অতিরিক্ত টাকা পাইয়ে দেয়ার নিশ্চয়তার বিনিময়ে একটা পার্সেন্টেজে চুক্তিও করছে তারা।

সড়ক জনপদ বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, ৬২ কিলোমিটার দীর্ঘ আঞ্চলিক মহাসড়কটি প্রসস্থকরণ উন্নয়নের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে হাজার ৪৩৫ কোটি টাকা। টাঙ্গাইলদেলদুয়ারলাউহাটিসাটুরিয়াকাওয়ালীপাড়াকালামপুর বাসস্ট্যান্ড সড়ক আঞ্চলিক মহাসড়কের যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরন প্রকল্পে পেভমেন্ট নির্মান, আরসিসি রিজিভ পেভমেন্ট নির্মান আরসিসি বক্স কালভার্ট নির্মান, ড্রেন নির্মান,সাইন,সিগন্যাল,কি:মি পোস্ট, রোড মার্কিং,রক্ষাপ্রদ কাজ করা হবে।

ফলে এ সড়কের অংশে বেশ কিছু নতুন সেতু, কালভার্ট, রিটেনিং ওয়াল, ইউলুপসহ রাস্তা প্রসস্থ করা হবে। এজন্য জমি অধিগ্রহণ করা হবে প্রায় ৭৩ হেক্টর জমি। কিছুদিন আগে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া অংশে সড়ক জনপদ বিভাগ সার্ভে করে লাল নিশিানা লাগিয়ে  চিহ্নত করে। এর পরপরই চিহ্নিত জমি মালিকদের অনেকে নাল জমিতে বাড়িঘর তোলা শুরু করেছেন। বাড়িঘর পুরানো দেখাতে কেও নতুন টিন ব্যবহার করছেননা। খুজে খুজে বেশি দামে হলেও পুরানো টিন কিনে বাড়িঘর তৈরি করছে। সাটুরিয়া বাজারের একাধীক টিন ব্যবসায়ী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তাঁরা জানান গত দুই তিন মাস ধরে পুরোনো টিনে বেশ চাহিদা।

জানা গেছে, টাংগাইলের মির্জাপুর গ্রামের ফজলুর রহমান সাজিব নামের দুজন সাটুরিয়ায় এসে জমির মালিকদের সাথে বৈঠক করে যাচ্ছে। নিজেদের জমি অধিগ্রহন বিভাগে চাকুরী করেন বলে পরিচয় দিচ্ছে। তারা অধিগ্রহনের আওতাভুক্ত জমির মালিকদের পরামর্শ দিচ্ছে ফসলি জমীতে বাড়ি ঘর তুলতে। এতে জমির দামের সাথে স্থাপনার জন্য অধিগ্রহণ বাবদ অতিরিক্ত টাকা পাইয়ে দেবে। অতিরিক্ত টাকার অর্ধেকটা তারা নেবে।

ঘটনাটি এখন সাটুরিয়ায় বহুল আলোচিত বিষয়। সংস্লিষ্ট জমির মালিকরা বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি। তবে সাটুরিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি জাহাঙ্গির হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেনে। তিনি জানান কিছুদিন ধরে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন জমিতে রাতারাতি বাড়ি উঠে যাচ্ছে। অথচ বাড়িঘর নির্মানের মত উপযোগীতা নেই। প্রায় জমিতেই চাষাবাদ হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে হয়ত পানিতে ডুবে যাবে। আবার ডোবা নালা ভরাট করে রাতারাতি বাড়িঘর উঠছে। সংস্লিষ্ট জমির মালিকরা বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি।

রও পড়ুন: তুরস্ক চাইলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা বিনির্মাণে লোক পাঠাবে বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

যোগাযোগ করা হলে মানিকগঞ্জ সড়ক জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহরিয়ার আলম জানান বিষয়টি তার জানানেই। তবে তিনি বলেন, ভাবে জমির দাম বাড়ানোর চেস্টা এক ধরনের অপরাধ। তিনি আরও বলেন, রাস্তার ম্যাপ করার সময় আমরা জমির ভিডিও রেকর্ড করে রেখেছি। জমি অধিগ্রহন বিভাগের (এল,) কাছে আমরা সেই ভিডিও রেকর্ড হস্তান্তর করবো। ও্ই ভিডিও দেখে জমি এবং স্থাপনার ক্ষতিপুরণ নির্ধারন করলে কেও ফাঁকিবাজি করতে পারবেননা।

 

চন্দন/মোরশেদ/দীপ্ত নিউজ

আরও পড়ুন

সম্পাদক: এস এম আকাশ

অনুসরণ করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন

স্বত্ব © ২০২৩ কাজী মিডিয়া লিমিটেড

Designed and Developed by Nusratech Pte Ltd.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More