সিরাজগঞ্জে দুই নারী ও এক শিশু হত্যা মামলায় দুই যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি প্রত্যেক আসামিকে আরও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একই মামলায় আরও একজনকে বেকুসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজের আদালতের বিচারক ফজলে খোদা মো. নাজির এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তরা হলেন, সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার চালা অফিস পাড়া মহল্লার হাজী মওলানা আব্দুল মুন্নাফের ছেলে আলামিন (৩৬) ও জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি থানার পবাহার নয়াপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে রবিউল ইসলাম (২৭)।
মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, ২০০৭ সালে গাজীপুর জেলার মাওনা চৌরাস্তায় একটি কাপড়ের দোকানে চাকরি করতেন আলামিন। এ সময় শ্রীপুর থানার টেংরা গ্রামের বাদল মন্ডলের স্ত্রী নাসরিন আক্তারের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। পরবর্তীতে তারা গোপনে বিয়ে করেন। বিয়ের বিষয়টি জানাজানি হলে নাসরিনের পরিবার ও স্বামী তাকে বুঝিয়ে আলামিনকে তালাক দেওয়ায়। এতে নাসরিনের ওপর চরম ক্ষিপ্ত হয় আলামিন। পুনরায় নাসরিনকে ফিরে পেতে তার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা করেন তিনি। তবে, এতে ব্যর্থ হন আলামিন। ক্ষোভে নাসরিনকে হত্যার পরিকল্পনা করে আলামিন। পরিকল্পনা মোতাবেক ২০১৬ সালের ৩১ জুলাই আলামিন নাসরিনকে ফোন দিয়ে দেখা করতে বলে। নাসরিন তার ফুপু মেহেরুন নেছা ও পাঁচ বছর বয়সী ভাগ্নি জাইমাকে সঙ্গে নিয়ে আলামিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে তার দোকানে যায়। এ সময় আলামিন ও তার সহযোগী রবিউল ইসলাম মিলে দোকানের পেছনে বিশ্রাম রুমে তাদের নিয়ে যায় এবং সেখানে বালিশ চাপা ও গলায় রশি পেচিয়ে ওই তিনজনকে হত্যা করে তারা। পরে মরদেহগুলো বস্তায় ভরে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানার খাঁজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেছনে যমুনা নদীতে ফেলে দেয়। পরের দিন মরদেহগুলো ভেসে উঠলে পুলিশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।
ওই সময় নিহতের পরিচয় না পাওয়ায় এনায়েতপুর থানার উপ–পরিদর্শক (এসআই) আজগর আলী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন। দীর্ঘদিন মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ ওই তিনজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। ১৬ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামীদের উপস্থিতিতে আদালত এ রায় দেন।
সিরাজুল ইসলাম/মোরশেদ আলম/দীপ্ত নিউজ