বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলায় একটি ব্রীজের জন্য ভোগান্তিতে পরেছেন ১০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ।
স্থানীয়রা সুপারি গাছ দিয়ে দীর্ঘদিন ব্রীজটি ব্যবহার করলেও প্রায় একমাস ধরে ব্রীজটি সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পড়ায় ভোগান্তি আরও বেড়েছে স্থানীয়দের। তবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর বলছে বরাদ্ধ না থাকায় নতুন করে ব্রীজটি নির্মান করা যাচ্ছে না।
সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার চিংড়াখালী ইউনিয়নের প্রতন্ত গ্রাম চন্ডিপুর। এই গ্রামের দাউরা খালের উপর নির্মিত আয়রন ব্রীজটি ভেঙ্গে যায় প্রায় ৪ বছর আগে। ব্রীজটি ভেঙ্গে যাওয়ার পর স্থানীয় গ্রামবাসি সুপারি গাছ দিয়ে মেরামত করে ব্রীজটি ব্যবহার করছিলো। যাতায়াতের বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় সে সময় জীবনের ঝুকি নিয়ে ওই ব্রীজটি দিয়ে বাধ্য হয়ে পার হতেন, চন্ডিপুর, পূর্ব চন্ডিপুর, বড় জামুয়া, ছোট জামুয়া, কাছিকাটা, চড়গোপালপুরসহ ১০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। তবে গত একমাস ধরে ব্রীজটি পুরোপুরি ভেঙ্গে যায়। এরপর থেকে নৌকায় করে খাল পার হচ্ছেন ব্রীজটির দু’পাড়ের স্থানীয় বাসিন্দাসহ স্কুল ও মাদ্রসার শিক্ষার্থীরা। এতে করে বিভিন্ন সময় দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছে স্কুল ও মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থীসহ নারী ও শিশুরা। এমন অবস্থায় ঝুকিপূর্ণ ব্রিজটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছে স্থানীয় গ্রামবাসী।
চন্ডিপুর গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থী আমেনা খাতুন বলেন, এই ব্রিজটি ভেঙ্গে যাওয়ার কারনে আমাদের অনেক ভোগান্তি। নৌকায় করে খাল পার হওয়ার সময় আমাদের ভয় লাগে। কিছুদিন আগে আমাদের এক বন্ধু নৌকা থেকে পড়ে যায়। পরে নৌকার মাঝি তাকে উদ্ধার করে।
একই গ্রামের দশম শ্রেনীর শিক্ষার্থী সজিব জোমাদ্দার বলেন, অনেক সময় আমরা নৌকা পায়ই না। তখন বাধ্য হয়ে খাল সাতড়ে আমাদের পাড় হওয়ায় লাগে।
পূর্ব চন্ডিপুর গ্রামের বাসিন্দা আসলাম শেখ বলেন, এই ব্রিজটির জন্য আমাদের আশপাশের ১০ গ্রামের হাজার হাজার মানুষ চড়ম ভোগান্তির মধ্যে রয়েছে। ব্রিজটি ভেঙ্গে যাওয়ার পর আমরা গ্রামবাসি চাঁদা তুলে সুপারি গাছ গিয়ে ব্রিজটি কোনমনে মেরামত করে ব্যবহার করতে থাকি। কিন্তু প্রায় একমাস ধরে সেটাও ভেঙ্গে যাওয়ার পর আমাদের নৌকা ছাড়া আর কোন বিকল্প পথ নেই।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ জামাল শেখ বলেন, দাউরা খালের উপর ব্রিজটি দীর্ঘদিন ধরে ভেঙ্গে পরে আছে। আমি বিষয়টি চেয়ারম্যান, ইউএনওসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে জানিয়েছি। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কারও কোন মাথা ব্যাথা নেই। এই ব্রিজটির জন্য হাজার হাজার মানুষ ভোগান্তির মধ্যে রয়েছে। আমি সরকারের কাছে দাবী জানাই দ্রুত যে ব্রিজটি মেরামত করা হয়।
বাগেরহাট স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শরিফুজ্জামান বলেন, ব্রিজটি নতুন করে নির্মানের জন্য আমাদের পক্ষ থেকে মাটি পরীক্ষাসহ আনুসাঙ্গিক কাজ গুলো সম্পন্ন করা হয়ে। তবে অর্থ বরাদ্ধ না হওয়ায় ব্রীজটি নির্মান করা যাচ্ছে না। বরাদ্ধ পেলে আগামী অর্থ বছরে ব্রীজটি নির্মানের করা হবে বলে জানান তিনি।
মোরশেদ আলম/দীপ্ত নিউজ