যুদ্ধ ও সংঘাতের পথ পরিহার করে মানবজাতির কল্যাণ ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য সকলকে একযোগে কাজ করার জন্য বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সদর দফতরে জেনারেল অ্যাসেম্বলি হলে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৮তম অধিবেশনে দেয়া ভাষণে একথা বলেন।
বিশ্ব নেতাদের উদ্দৈশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজ আপনাদের সকলের কাছে, বিশ্ব নেতাদের কাছে আমার আবেদন, যুদ্ধ ও সংঘাতের পথ পরিহার করুন এবং আমাদের জনগণ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য স্থায়ী শান্তি, মানবজাতির কল্যাণ এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করুন।‘
আসুন আমরা রোহিঙ্গাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করি প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগণের প্রতি বিশ্ব নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। কেননা ইতোমধ্যেই তাদের বাস্তুচ্যুতির ছয় বছর পেরিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, সম্পূর্ণ মানবিক কারণে আমরা অস্থায়ীভাবে তাদের আশ্রয় দিয়েছি। কিন্তু, পরিস্থিতি এখন আমাদের জন্য সত্যিই অসহনীয় হয়ে উঠেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘায়িত উপস্থিতি বাংলাদেশের অর্থনীতি, পরিবেশ, নিরাপত্তা এবং সামাজিক–রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। প্রত্যাবাসন নিয়ে অনিশ্চয়তা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক হতাশার জন্ম দিয়েছে। এই পরিস্থিতি সম্ভাব্য মৌলবাদকে ইন্ধন দিতে পারে।
তিনি বলেন, বহুপক্ষীয় ক‚টনীতিকে জোরদারকরণ, জাতিসঙ্ঘের উপর অর্পিত দায়িত্বগুলো পালন করার জন্য প্রচেষ্টা ও সাহসী বক্তব্য, এবং বৈশ্বিক সঙ্কট উত্তরণে সুদূরপ্রসারী ও বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ সবসময় জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসেকে সমর্থন জানায়। প্রধানমন্ত্রী ইউএনজিএ অধিবেশনে প্রদত্ত তার ভাষণে রোহিঙ্গা সঙ্কট, জলবায়ু পরিবর্তন, খাদ্য সংকট, মানবাধিকার, নারীর ক্ষমতায়ন, স্বাস্থ্যসেবা, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি), সন্ত্রাসবাদ এবং সরকারের অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং অন্যান্য বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারী ও জলবায়ু সঙ্কটের প্রভাব এবং বিশ্বব্যাপী খাদ্য, অর্থায়ন এবং জ্বালানি নিরাপত্তার উপর রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব উন্নয়নশীল দেশগুলোতে উন্নয়ন–লক্ষ্যগুলো অর্জনে ব্যাপক প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেছে ।
তিনি বলেন, এ বছরের মার্চ মাসে কাতারের দোহাতে অনুষ্ঠিত এলডিসি–৫ সম্মেলনে স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জন্য অপেক্ষমান দেশগুলোকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে। আমি জাতিসঙ্ঘ এবং উন্নয়ন সহযোগীদের দোহা কর্মসূচির সম্পূর্ণ ও কার্যকর বাস্তবায়নের আহ্বান জানাচ্ছি।
মোরশেদ আলম/দীপ্ত নিউজ