নওগাঁর রাণীনগরের মালশন–গিরিগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের আইসিটি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আব্দুল মতিন স্কুলে আসেন নিজের মর্জি মাফিক। দু্ই বছরের বেশি সময় ধরে এমনটা চলছে ওই স্কুলে। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, ২০২১ সালে উপজেলার ৫নং বড়গাছা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন আব্দুল মতিন। এরপর থেকে তিনি শিক্ষক পদের বেতন–ভাতাসহ সব সুবিধা নিয়েই চালিয়ে যাচ্ছেন চেয়ারম্যান পদের কার্যক্রম।
স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তিনি বিদ্যালয়ে আসেন নিজের ইচ্ছে মাফিক। তিনি বিদ্যালয়ে নিয়মিত না আসায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাধ্য হয়ে নিজেই তার বিষয়ে পাঠদান করেন। কখনো আবার অন্য শিক্ষক দিয়ে পাঠদানের কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুল মতিন মুঠোফোনে জানান, মাঝে মধ্যে বিদ্যালয়ে গিয়ে আইসিটি বিষয়ে কিছু শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান করান তিনি। তবে অনেক সময় ক্লাস নেয়ার সুযোগ হয়ে ওঠে না। তবে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সম্মত থাকায় তিনি দ্রুতই তার বিষয়ে পাঠদানের জন্য বিদ্যালয়ে একজন প্রক্সি শিক্ষক নিয়োগ করবেন।
বিদ্যালয়ের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল হামিদ বলেন, নিয়ম–নীতি অনুসারে একজন সহকারী শিক্ষককে অবশ্যই বিদ্যালয় শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে অবস্থান করতে হবে। কিন্তু আব্দুল মতিন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে বিদ্যালয়ে আসেন নিজের ইচ্ছে মাফিক। দীর্ঘ সময় ধরে শিক্ষক মতিনের পাঠদান আমিসহ অন্য শিক্ষকরা করিয়ে এসেছি। এতে করে শিক্ষার্থীদের লাভের চেয়ে ক্ষতিটা হয়েছে অনেক বেশি।
উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার কামরুল হাসান বলেন, ‘একজন শিক্ষক সরকারী বেতন–ভাতা ভোগ করবেন আর তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করবেন না- এমন হতে পারে না। শিক্ষক আব্দুল মতিনের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে অবশ্যই বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফর রহমান বলেন, ‘আমার জানা মতে এ বিষয়ে ঢাকা থেকে শিক্ষক আব্দুল মতিনকে শোকজ লেটার দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তার পরে কী হয়েছে তা আমার জানা নেই। তবে নির্ধারিত শিক্ষক পাঠদান না করার কারণে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কিনা এই বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে দ্রুত ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আব্দুর রউফ রিপন/ শায়লা/ দীপ্ত সংবাদ