টানা ৩ বছর ‘বিয়ের পর জামাইয়ের সাথে যাইস’ টাইপের এক মেয়ের সাথে প্রেম করে শেষে বিয়ের পিড়িতে বসতে সক্ষম হলাম। কিন্ত ঐযে শাশুড়ির আমার বৌকে বলা কথাটা, বিয়ের পর জামাইয়ের সাথে যাইস! এই কথাটাই যেন একপ্রকার দায়িত্ব এবং কর্তব্যের মধ্যেই পড়লো।
বিয়ের আগে আমি ৫৬ টা জেলা ঘুরে ফেললেও আমার বৌ ঘুরেছে মাত্র ৩ টা জেলা। তাও পড়াশোনা আর ফ্যামিলির সুবাদেই। তাই বিয়ের পর পরই দারুণ ঘোরা পাগল বৌকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়া এবং একটা ২৬ বছরের মেয়ের আজীবনের স্বপ্ন পূরণের সারথি হিসেবে গুরুদায়িত্বটা কাধে তুলে নিলাম। যেহেতু শুধুমাত্র বিয়ের পর জামাইয়ের সাথে ঘুরবে বলেই জীবনের ২৬ টা বছর মেয়েটা পার করে দিয়েছে, এই সাধ কিভাবে অপূর্ণ রাখি?
যেদিন সেইন্টমার্টিনের টিকেট সহ সব কিছু কনফার্ম হলো, সেদিন তার চোখের মুখের আনন্দের ঝিলিকটা আসলেই দেখার মত ছিল। যেন নীল আর্মস্ট্রং পুরো মানব জাতীর ইতিহাসে প্রথমবার চন্দ্র বিজয় করছে! আমি শুধু অবাক হয়ে তাকেই দেখছিলাম, আর ভাবছিলাম এতটা সাধারণও মানুষের জীবন হয়? এভাবেও একটা মেয়ের জীবনে আনন্দের ঢল নামতে পারে? এ গল্পটা আমার বৌয়ের না শুধু, আমি হলফ করে বলতে পারি এই গল্পটা বাংলাদেশের আরও লাখো মেয়ের। যারা হয়ত এখনও সমুদ্রের নীল জল ছুয়ে দেখেনি বা দেখার স্বপ্নও করেনি। হয়ত তার মাও বলেছিল বিয়ের পর জামাইয়ের সাথে যাইস, কিন্ত তার জামাই হয়ত এই বাক্যটাকে শুধুমাত্র উপহাস হিসেবেই নিয়েছে, এই বাক্যটার গভীরতা যাচাই করেনি।
করবেই বা কিভাবে? একটা ছেলে হয়ে একটা মেয়ের জীবন চিন্তা করতেও সাহস থাকা প্রয়োজন, যেটা আমাদের ছেলেদের মধ্যে হয়ত বিধাতা দেয়নি।
যাই হোক, আমাদের দুজনের ছবি তুলতে অনেক ভাল লাগে। কিন্ত কোথাও গেলে মন মত সুন্দর ছবি তুলে দেওয়ার লোক পাই না। হয়ত ছবি বাকা হয়, নয়ত অন্ধকার আর নাহলে ছবির ফ্রেম ঠিক থাকে না। আর তাই দুইজনে চিন্তা ভাবনা করে একটা রিমোট কন্ট্রোল ট্রাইপড কিনলাম আর সেটা দিয়েই নিজেদের সেল্ফ পোট্রেইট ছবি তোলা শুরু করলাম। অনেকে ছবিগুলো দেখে বিশ্বাসই করেননা যে ছবিগুলো আমাদের নিজেদেরই তোলা।