গাইবান্ধা চরাঞ্চলসহ জেলার চারিদিকে যেন খা খা অবস্থা বিরাজ করছে। গত কয়েকদিন ধরে বেড়েছে প্রখর রোদ আর ভ্যাপসা গরম। মানুষদের মধ্যে শুরু হয়েছে হাঁসফাঁস। বিশেষ করে রোজাদার মানুষগুলো একটু স্বস্তি পেতে ছুটছেন এদিক-সেদিক। কেউ বা ছুটছে গাছতলায়। আর তীব্র গরমের তৃষ্ণা মেটাতে শিশুরা আইসক্রিম খেয়ে প্রাণজুড়ানোর চেষ্টা করছে।
বৃহস্পতিবার ( ১৩ এপ্রিল) গাইবান্ধার নিভৃত গ্রামাঞ্চলে দেখা যায়, গরমের ফাঁদে পরা মানুষের হাঁসফাঁসের চিত্র। এসময় রোজাদার মানুষেরা ঘাম ঝড়া দেহ নিয়ে গাছের নিচে বসে হাঁপাচ্ছিলেন। দেখা যায়, গাইবান্ধা জেলায় একসপ্তাহ ধরে দিনের বেলায় প্রখর রোদের ঝলকানি। আর এই রোদে পুড়ছে কৃষকের মাঠসহ বাসা-বাড়ি ও পথঘাট। দেখা নেই বৃষ্টির। যার ফলে বেড়েছে দাবদাহ। অসহনী গরমে মানুষের মাঝে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এর প্রভাবে খেটে খাওয়া মানুষসহ সকল শ্রেণি পেশার মানুষেরা কোন কাজই মনোযোগি হতে পারছে না। অফিস-আদালতের কর্মজীবিদেরও উষ্ঠাগত অবস্থায়। তীব্র গরমের ঠেলায় তারা ঠিকভাবে করতে পারছে না কাজকর্ম।
দিনমজুর আজাহার আলী জানান, কয়েক দিনের প্রখর কাঁঠফাটা রোদ আর অসহনীয় গরমে কৃষকের মাঠে কাজ করতে ব্যর্থ হচ্ছেন। সেই সঙ্গে সিএনজি,আটোরিকশা ও ভ্যান চালকদেরও একই অবস্থায়। সাদুল্লাপুরের কৃষক নেজাজ খান জানান, মাঠে পাটসহ নানা ধরণের সবজি ক্ষেত রয়েছে। অনাবৃষ্টির কারণে পুড়ে যাচ্ছে ক্ষেতগুলো। এতে ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। পলাশবাড়ী বাস স্ট্যান্ডে আসা রিকশাভ্যান চালক রুহুল কবির বলেন, জীবিকার তাগিদে গাড়ি নিয়ে বের হয়েছি। কিন্তু অসহ্য গরমের ঠেলায় বোতলের ঠান্ডা পানি মাথায় ঢেলে কিছুটা স্বস্তি পেলাম। এ কারণে শ্রমজীবি মানুষের থমকে গেছে জীবনযাত্রা।
গ্রামাঞ্চলে আসা ভ্রাম্যমাণ আইসক্রিম বিক্রেতা আব্দুল কাশেম মিয়া জানান, প্রতি বছরে গরম পড়লে বাইসাকেলে আইসক্রিম বিক্রি করেন। যা শিশুসহ সব বয়সের মানুষের তৃষ্ণাপূরণের উপযোগী। চৈত্রের তীব্র তাপে সম্প্রতি শিশুরা আইসক্রিম খাচ্ছে বেশি। তবে রোজার কারণে প্রাপ্ত বয়সীরা দিনের বেলায় কিনছেন না। সাঘাটার মেহেদী হাসান নামের এক কনফেকশনারী দোকানি বলেন, সম্প্রতি তীব্র দাবদাহের কারণে ব্যবসা বেড়েছে কনফেকশনারী দোকানিদের। এসব দোকানে ফ্রিজে রাখা পানীয়, আইসক্রিম, দই, শরবত ও ইত্যাদি জাতিয় ঠান্ডা খাবার কিনতে ভিড় করছে গরমের কবলে পড়া মানুষেরা। অনেকে ইফতারির পরই এসব খাদ্যদ্রব্য খাওয়ার চেষ্টা করছেন।
গাইবান্ধা জেলা সিভিল সার্জন আব্দুল্যাহেল মাফি জানান, তীব্র গরমে মানুষদের বেড়েছে রোগবালাই। অনেকের স্বর্দি, জ্বর, কাশি, মাথা ব্যথা ও নানা রোগের আক্রান্ত হচ্ছেন। ইদানিং এমন রোগির চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।
আল/দীপ্ত সংবাদ