দক্ষিণ আফ্রিকার জোহান্সবার্গে সন্ত্রাসীদের গুলিতে মো. সোহাগ (৩০) নামের নোয়াখালীর এক যুবক নিহত হয়েছেন। সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত হয়েছেন সোহাগের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের একজন নিরাপত্তা প্রহরীও।
শনিবার (১ এপ্রিল) বাংলাদেশে সময় রাত ১২টার দিকে জোহান্সবার্গে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এ হামলার ঘটনা ঘটে। নিহত মো. সোহাগ নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার নাটেশ্বর ইউনিয়নের নজরপুর গ্রামের কোব্বাত মিয়ার ছেলে। দুই ভাই চার বোনের মধ্যে সোহাগ সবার ছোট। তাঁর চার মাস বয়সী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
নিহতের বড় ভাই বেলাল হোসেন জানান, জীবিকার সন্ধানে গত ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে দক্ষিণ আফ্রিকায় যান সোহাগ। গত বছর বাড়িতে আসার পর বিয়ে করে ৯ মাস ছিলো সে। গত বছর পঞ্চম রমজানে বাড়ি থেকে আফ্রিকায় যায় সোহাগ। এরই মধ্যে তার একটি ছেলে সন্তান হয়। সবকিছু ঠিক থাকলে নিজের সন্তানকে দেখার জন্য ইদের পর বাড়িতে আসার কথা ছিলো সোহাগের।
তিনি আরও জানান, প্রতিদিন রাত ১১টার দিকে সোহাগের সাথে মোবাইলে কথা বলতেন তিনি। শনিবার রাত ১১টার দিকে কথা বলা অবস্থায় সোহাগের মোবাইলের সংযোগ কেটে যায়। আফ্রিকায় ইফতারের সময় হয়েছে ভেবে তিনি (বেলাল) পরবর্তীতে আর কল করেন নি, ভাবছিলেন ভোর রাতে ছোট ভাই সোহাগের সাথে আবার কথা হবে। পরে সেহরির সময় ভাগিনা মামুনের কাছ থেকে শুনতে পান সোহাগ সন্ত্রাসীদের গুলিতে মারা গেছেন।
নিহতের ভাগিনা মামুন বলেন, সেহরির সময় সোহাগের বন্ধু পলাশ জানায় ইফতার শেষ করে তার ৪জন সহকর্মী সহ দোকানে যান। এর কিছুক্ষণ পর ৬-৭জন সেখানকার স্থানীয় সন্ত্রাসী দোকানে এসে হামলা চালিয়ে লুটপাট শুরু করে। সন্ত্রাসীদের হামলার সময় দোকানে থাকা অপর সবাই নিচে শুয়ে পড়লেও সোহাগ পাশে দাঁড়ানো অবস্থায় ছিলেন। লুটপাট শেষে সন্ত্রাসীরা সবাইকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছুঁড়লে সোহাগ ও তাদের প্রহরী গুলিবিদ্ধ হন। তাদের দ্রুত উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে সোহাগের মৃত্যু হয়। সোহাগের মাথা সহ গলার অংশে একাধিক গুলি লেগেছিলো।
এদিকে সোহাগের অকাল মৃত্যুতে তার বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সন্তানকে হারিয়ে কান্নায় জ্ঞান হারাচ্ছের বাবা কোব্বাত মিয়া, মা নূরজাহান বেগম। বিয়ের বছর পার হতে স্বামীকে হারিয়ে পাগল প্রায় সোহাগের স্ত্রী আখি আক্তার। নিহতের পরিবারের দাবি সরকারি সহযোগিতায় দ্রুত সময়রে মধ্যে যেন সোহাগের মৃতদেহ বাংলাদেশে আনার ব্যবস্থা করা হয়।
আল/দীপ্ত সংবাদ