বিশ্ববাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে স্বর্ণের দাম। এতে মূল্যবান এই ধাতুর বাজারে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে স্বর্ণের প্রতি চাহিদা বৃদ্ধি, ডলারের দুর্বলতা ও সুদের হার কমার প্রত্যাশা—সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের মূল্য ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার (২২ ডিসেম্বর) স্পট মার্কেটে স্বর্ণের দাম রেকর্ড সর্বোচ্চ প্রতি আউন্স ৪ হাজার ৩৮৩ দশমিক ৭৩ ডলারে পৌঁছেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের সুদের হার কোয়ার্টার–পয়েন্ট কমানো, ভূ–রাজনৈতিক ও বাণিজ্য উত্তেজনা এবং বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাপক স্বর্ণ কেনার প্রবণতা দাম বাড়ার প্রধান কারণ। পাশাপাশি ডলারের সূচক তুলনামূলক দুর্বল থাকায় বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য স্বর্ণ কেনা কিছুটা সস্তা হয়েছে, যা চাহিদা আরও বাড়িয়েছে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, চলতি বছর নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে স্বর্ণের চাহিদা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। এর ফলে বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত স্বর্ণের দাম বেড়েছে প্রায় ৬৭ শতাংশ। বিনিয়োগকারীরা ধারণা করছেন, ২০২৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত দুই দফা সুদের হার কমতে পারে। এতে সুদ না পাওয়া সম্পদ হলেও স্বর্ণের প্রতি বিনিয়োগ আরও বাড়তে পারে।
এদিকে, আন্তর্জাতিক বাজারের প্রভাব পড়েছে দেশের বাজারেও। দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে স্বর্ণ। সবশেষ গত ২১ ডিসেম্বর রাতে দেয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) স্বর্ণের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। এবার ভরিতে দাম বাড়ানো হয়েছে ১ হাজার ৫০ টাকা।
নতুন মূল্য অনুযায়ী, দেশের বাজারে প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ১৮ হাজার ১১৭ টাকা, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। একই সঙ্গে ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ২ লাখ ৮ হাজার ২০২ টাকা, ১৮ ক্যারেটের দাম ১ লাখ ৭৮ হাজার ৪৫৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৪৮ হাজার ৫৯৯ টাকা।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে মোট ৮৭ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬০ বার দাম বাড়ানো হয়েছে এবং ২৭ বার কমানো হয়েছে। এর আগে ২০২৪ সালে ৬২ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছিল, যেখানে ৩৫ বার দাম বাড়ানো ও ২৭ বার কমানো হয়েছিল।