শুভ মহালয়ার মধ্য দিয়ে আজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।
রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) ভোর সাড়ে ৫টায় শেফালি–ঝরা প্রভাতে চণ্ডীপাঠ, ঢাক–কাঁসর ও শঙ্খধ্বনির মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গাকে মর্ত্যে আহ্বান জানানোর মধ্য দিয়ে সারা দেশে শুরু হয়েছে দেবী বন্দনার মহাউৎসব।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, আজ দশভুজা শক্তিরূপে দেবী দুর্গা মণ্ডপে মণ্ডপে অধিষ্ঠান করবেন। শেফালিঝরা শারদ প্রভাতে জলদকণ্ঠে চণ্ডীপাঠ আর পিতৃপক্ষের তর্পণের সমাপন ঘটেছে। এই চণ্ডীপাঠেই আছে দেবী দুর্গার সৃষ্টির কাহিনি।
শারদীয় দুর্গাপূজার গুরুত্বপর্ণ একটি অনুষঙ্গ এই মহালয়া। পুরাণ মতে, এদিন দেবী দুর্গার আবির্ভাব ঘটে। এ দিন থেকেই দুর্গাপূজার দিন গণনা শুরু হয়। মহালয়া মানেই প্রতীক্ষা মায়ের পূজার। আর এই দিনেই দেবীর চক্ষুদান করা হয়।
পুরাণে বলা আছে, দুর্গোৎসবের তিনটি পর্ব– ‘মহালয়া’, ‘বোধন’ ও ‘সন্ধিপূজা’। মহালয়ার দিনেই দেবী দুর্গা মহিষাসুর বধের দায়িত্ব পান। শিবের বর অনুযায়ী কোনো মানুষ বা দেবতা মহিষাসুরকে হত্যা করতে পারতো না। ফলে অসীম শক্তিধর মহিষাসুর দেবতাদের স্বর্গ থেকে বিতাড়িত করে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের অধিপতি হতে চাইলে ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিব সম্মিলিতভাবে ‘মহামায়া’র রূপে অমোঘ নারীশক্তির সৃষ্টি করেন। দেবতাদের দশটি অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সিংহবাহিনী সঙ্গে নিয়ে দেবী দুর্গা টানা নয় দিনের যুদ্ধে মহিষাসুরকে পরাজিত ও বধ করেন।
মহালয়ার ভোর থেকেই শুরু হয় পূর্বপুরুষদের উদ্দেশে তর্পণ। সনাতন বিশ্বাস অনুযায়ী, পিতৃপক্ষে প্রয়াত আত্মারা স্বর্গ থেকে মর্ত্যে আসেন। তাদের আত্মার মঙ্গল কামনায় ভক্তরা জল, তিল ও অন্ন উৎসর্গ করে তর্পণ করেন।
আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও মূলত আজ থেকেই শারদীয় দুর্গোৎসবের আগমনধ্বনি শোনা যাচ্ছে। এই দিনটি সারা দেশে বেশ আড়ম্বরের সঙ্গে উদযাপিত হচ্ছে। মহালয়া উপলক্ষে মন্দির ও পূজা কমিটিগুলো নানান কর্মসূচি নিয়েছে।