বিজ্ঞাপন
শনিবার, জুন ১৪, ২০২৫
শনিবার, জুন ১৪, ২০২৫

১৪ জুন বিশ্ব রক্তদাতা দিবস

Avatar photoদীপ্ত নিউজ ডেস্ক

ছুটি বা উৎসবের সময়ে রক্তের প্রয়োজনে কাউকে না পাওয়া গেলে ভুক্তভোগী মাত্রই জানেন রক্তের গুরুত্ব। কিন্তু বাংলাদেশে তরুণদের মধ্যে এখনও অনেকে রক্তদানের বিষয়ে পুরোপুরি সচেতন হতে পারেন নি। তাদের ধারণা– ‘আচ্ছা, কেউ না কেউ তো দিয়ে দেবে!’, ‘রক্ত দিলে যদি শরীর খারাপ করে!’, ‘সুঁই, উফ! ভাবতেই ভয় লাগে!’

বাংলাদেশে বছরে গড়ে ১০ লক্ষাধিক ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন হয়। কিন্তু তার মাত্র একতৃতীয়াংশ আসে স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের কাছ থেকে। বাকিটা? তরুণদের এহেন মানসিকতার কারণে এই চাহিদার একটা অংশ পূরণ হয় পেশাদার দাতাদের কাছ থেকে—যাদের রক্ত মোটেই নিরাপদ নয়। আর বাকিটা মেটানোর চেষ্টা চলে আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবদের দিয়ে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবমতে, একটি দেশের মাত্র ১ থেকে ৩ শতাংশ মানুষ নিয়মিত রক্তদাতা হলে সে দেশের রক্তের চাহিদা পুরোপুরি পূরণ করা সম্ভব। আমাদের দেশে তরুণের সংখ্যা ৫ কোটিরও বেশি। তার ১ শতাংশ যদি নিয়মিত রক্ত দেন, তাহলে বাংলাদেশ হয়ে উঠতে পারে বিশ্বের সেরা নিরাপদ রক্ত সরবরাহকারী একটি দেশ।

আর এই রক্তদান কেবল অন্যের জন্যে নয়, নিজের জন্যেও উপকারী। গবেষণা বলছে, নিয়মিত রক্তদানে শরীর নতুন রক্তকণিকা তৈরির সক্ষমতা বাড়ে, অস্থিমজ্জা সক্রিয় হয়, রক্তের প্রবাহ ভালো থাকে। এতে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে, শরীর থাকে চনমনে, এমনকি রক্তদানে মানসিক প্রশান্তিও বাড়ে। কারণ আপনি জানেন— রক্তদানের মতো মহৎ একটি ছোট্ট সিদ্ধান্তই হয়ে উঠতে পারে মুমূর্ষ কোনো রোগীর জীবনরক্ষাকারী সৎকর্ম।

তবে রক্তদানের এই পুরো প্রক্রিয়াটি নিরাপদ হওয়া জরুরি। মানসম্পন্ন ব্লাড ব্যাংকে গিয়ে রক্ত দিলে সেখানে WHO নির্ধারিত পাঁচটি জরুরি স্ক্রিনিং টেস্ট হয়—হেপাটাইটিস বি ও সি, সিফিলিস, ম্যালেরিয়া এবং এইচআইভি। এসব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ রক্তই রোগীর জন্যে নিরাপদ।

রক্তদান তাই কেবল জরুরিভিত্তিক প্রতিক্রিয়া নয়—এটা হওয়া উচিত সামাজিক অভ্যাস, নৈতিক দায় এবং আত্মসন্তুষ্টির এক অনন্য মাধ্যম। প্রতি চার মাসে একবার রক্ত দেওয়াটা কোনো কঠিন কাজ নয়। বরং তরুণদের শিক্ষার্থী জীবন থেকেই নিয়মিত চার মাস পর পর রক্তদানের অভ্যাস গড়ে তোলার জন্যে সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে নানামুখী পদক্ষেপ নেয়া উচিত।

ব্যক্তি উদ্যোগ থেকেই এ কার্যক্রম শুরু হতে পারে। চলুন না, পরিচিত তরুণদের এই সহজ অভ্যাসটি গড়ে তোলার জন্যে উদ্বুদ্ধ করি। আত্মবিশ্বাস আর গর্বের সাথে আঠারোর্ধ্ব প্রতিটি তরুণ যেন বলতে পারে– ‘আমি একজন স্বেচ্ছা রক্তদাতা, নিয়মিত রক্তদান করি। তাহলেই ১৮ কোটি মানুষের দেশে অন্তত রক্তের অভাবে কোনো রোগীর প্রাণনাশের ঝুঁকি থেকে মুক্তি পাবো আমরা। ১৪ জুন বিশ্ব রক্তদাতা দিবসের প্রাক্কালে সকল স্বেচ্ছা রক্তদাতার প্রতি শুভ কামনা।

অধ্যাপক ড. কাজী নাহিদা বেগম

উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা

আরও পড়ুন

সম্পাদক: এস এম আকাশ

অনুসরণ করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন

স্বত্ব © ২০২৩ কাজী মিডিয়া লিমিটেড

Designed and Developed by Nusratech Pte Ltd.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More