কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অস্থিরতা,খুনাখুনি–সংঘাত যেন বেড়েই চলেছে। আধিপত্য বিস্তারের জেরে বুধবার (০৮ মার্চ) সকাল ৮টার দিকে দুষ্কৃতকারীদের গুলিতে লম্বাশিয়া ২–ওয়েস্ট নম্বর আশ্রয় শিবিরের ডি–ব্লকে রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতা ছৈয়দ হোসেন খুন হন।
স্থানীয়দের বরাতে উখিয়া–১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক অতিরিক্ত উপ–মহাপরিদর্শক (এডিআইজি) ছৈয়দ হারুনুর রশিদ বলেন, ছৈয়দ হোসেন সকালে উখিয়ার লম্বাশিয়া ২–ওয়েস্ট রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরের ডি–ব্লকে নিজের ঘরের পাশে একটি দোকানে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় ৭ থেকে ৮ জনের মুখোশধারী একদল দুর্বৃত্ত তাকে লক্ষ্য করে উপর্যুপুরি গুলি ছোড়লে তিনি জখম হন। খবর পেয়ে এপিবিএন ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। এডিআইজি বলেন, রোহিঙ্গা শিবিরে কয়েকটি দুষ্কৃতকারী দল সক্রিয় রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
এদিকে সোমবার (০৬ মার্চ) রাত সাড়ে ১২টার দিকে বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নূর হাবি ওরফে ডা. ওয়াক্কাস (৪০) নামে এক রোহিঙ্গাকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ নিয়ে চলতি বছরের গেল দুমাসে দুষ্কৃতকারীদের গুলিতে খুন হয়েছেন আট রোহিঙ্গা।
এছাড়াও ক্যাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার জন্য কথিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে দায়ী করছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। তারা জানান, কথিত সন্ত্রাসীরা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। শুধু এক স্থানে না, একযোগে অন্তত পাঁচটি জায়গায় আগুন ধরিয়ে দেন। আর অগ্নিকাণ্ডের কারণ জানতে ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। সোমবার (৬ মার্চ) সকাল থেকে তদন্ত কমিটি অনুসন্ধানের কাজ শুরু করে, যা বৃহস্পতিবার (০৯ মার্চ) তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা রয়েছে।
ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের মধ্যে খুনোখুনি বাড়ায় আতঙ্কে স্থানীয়রা। এসব ঘটনার পেছনে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে দাবি জনপ্রতিনিধিদের।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দায়িত্বে থাকা ৮–আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক (অতিরিক্ত ডিআইজি) মো. আমির জাফর জানান, দুষ্কৃতকারীদের ধরতে অভিযান চলছে।
ডিআইজি আমির আরও বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন অভিযান পরিচালনা করছি। কখনো এপিবিএন পুলিশ একা করছে, কখনো জেলা পুলিশ বা র্যাবকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করছে। তবে সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায় আশা করি, ক্যাম্পের এই অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।
এমি/দীপ্ত