শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪
শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪

১৭ বছর পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতল ভারত

Avatar photoদীপ্ত নিউজ ডেস্ক

১৭ বছর পর দ্বিতীয়বারের মতো টিটোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জিতল ভারত। বিশ্বকাপ নবম আসরের ফাইনালে ভারত ৭ রানে হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। এর আগে ২০০৭ সালে বিশ্বকাপের প্রথম আসরে পাকিস্তানকে হারিয়ে শিরোপা ঘরে তুলেছিলো ভারত।

শনিবার (২৯ জুন) প্রথমে ব্যাট করে বিরাট কোহলির হাফসেঞ্চুরিতে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৭৬ রান করে ভারত। বিরাট কোহলি ৫৯ বলে ৭৬ রান করেন।

জবাবে ১৫ ওভার শেষে জয়ের জন্য ৩০ বলে ৩০ রানের সমীকরণ নামিয়ে আনে দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু শেষ ৫ ওভারে ভারতীয় বোলারদের অসাধারণ বোলিং নৈপুণ্যের সামনে ২২ রানের বেশি নিতে পারেনি প্রোটিয়ারা। ফলে প্রথমবারের মতো আইসিসি বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেও শিরোপা জিততে পারল না দক্ষিণ আফ্রিকা।

বার্বাডোজের ব্রিজটাউনে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং বেছে নেয় ভারত। ওপেনার বিরাট কোহলির ৩টি বাউন্ডারিতে পেসার মার্কো জানসেনের প্রথম ওভারেই ১৫ রান পায় টিম ইন্ডিয়া। স্পিনার কেশব মহারাজের পরের ওভারের প্রথম দুই বলে চার আদায় করে নেন আরেক ওপেনার অধিনায়ক রোহিত শর্মা। তবে চতুর্থ বলে সুইপ করে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে হেনরিচ ক্লাসেনকে ক্যাচ দেন ৯ রান করা রোহিত।

দলীয় ২৩ রানে অধিনায়কের বিদায়ে ক্রিজে এসে রানের খাতা খোলার আগেই একই ওভারের শেষ বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন উইকেটরক্ষক ঋসভ পান্থ।

পঞ্চম ওভারে পেসার কাগিসো রাবাদার বলে সূর্যকুমার যাদব ব্যক্তিগত ৩ রানে ফিরলে চাপে পড়ে ভারত। ৩৪ রানে ৩ উইকেট হারায় টিম ইন্ডিয়া। এ অবস্থায় ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পেয়ে ক্রিজে আসেন অক্ষর প্যাটেল।

কোহলিকে নিয়ে ভারতের রানের চাকা ঘুড়িয়েছেন প্যাটেল। উইকেটের সাথে দ্রুত মানিয়ে রানের গতি বাড়ান প্যাটেল। দু’জনের জুটিতে ১৪তম ওভারে ভারতের রান ১শতে পৌঁছে যায়। ঐ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেটরক্ষক কুইন্টন ডি ককের দারুন থ্রোতে হাফসেঞ্চুরির দোড়গোড়ায় গিয়ে রান আউট হন প্যাটেল। ১টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৩১ বলে ৪৭ রান করেন তিনি। চতুর্থ উইকেটে প্যাটেলকোহলি ৫৪ বলে ৭২ রান যোগ করেন।

১৪তম ওভারে প্যাটেল ফেরার পর নতুন ব্যাটার হিসেবে ক্রিজে এসে রানে গতি বাড়ান শিবম দুবে। এ অবস্থায় ১৭তম ওভারে টিটোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ৩৮তম হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন ৪৮ বল খেলা কোহলি। ১৭ ওভার শেষে ভারতের রান দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ১৩৪।

১৮তম ওভারে রাবাদার বলে ১টি করে চারছক্কায় ১৬ রান নেন কোহলি। এরপর জানসেনের করা ১৯তম ওভারে প্রথম চার বলে ১টি করে চারছক্কায় ১৩ রান তুলেন ফাইনলের আগে পুরো টুর্নামেন্টে ব্যর্থ ভারতের সাবেক এ অধিনায়ক। তবে ওভারের পঞ্চম বলে বিদায় নেন ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় ৫৯ বলে ৭৬ রান করা কোহলি। এই ইনিংসের আগে চলতি আসরে সাতবার ব্যাট করে ৭৫ রান করেছিলেন কোহলি। পঞ্চম উইকেটে কোহলিদুবে জুটি ৩৩ বলে ৫৭ রান যোগ করেন।

কোহলি ফেরার পর শেষ ৭ বলে ১৩ রান পায় ভারত। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৭৬ রানের সংগ্রহ পায় উপমহাদেশের দলটি। টিটোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে ফাইনালে এটিই সর্বোচ্চ দলীয় রান। ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৬ বলে ২৭ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন দুবে। বল হাতে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে মহারাজ ২৩ রানে ও এনরিচ নর্টি ২৬ রানে ২টি করে এবং জানসেনরাবাদা ১টি করে উইকেট নেন।

১৭৭ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে শুরুতেই চাপে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। দ্বিতীয় ওভারে রেজা হেনড্রিক্সকে ৪ রানে বোল্ড করেন পেসার জসপ্রিত বুমরাহ। পরের ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক আইডেন মার্করামকে ৪ রানে থামান আরেক পেসার অর্শদীপ সিং।

১২ রানে ২ উইকেট পতনের পর দক্ষিণ আফ্রিকাকে লড়াইয়ে ফেরান আরেক ওপেনার ডি কক ও ট্রিস্টান স্টাবস। ৩৮ বলে ৫৮ রানের জুটি গড়েন দু’জনে। ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ২১ বলে ৩১ রান করা স্টাবসকে শিকার করে ভারতকে ব্রেকথ্রু এনে দেন প্যাটেল।

দলীয় ৭০ রানে স্টাবস ফেরার পর নতুন ব্যাটার ক্লাসেনকে নিয়ে দলের রান ১শ পার করেন ডি কক। ১৩তম ওভারে ডি কককে শিকার করে ভারতকে লড়াইয়ে ফেরার পথ দেখান অর্শদীফ। ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩১ বলে ৩৯ রান করেন ডি কক।

ডি কক যখন ফিরেন তখন ৬ উইকেট হাতে নিয়ে ৪৫ বলে ৭১ রান দরকার ছিলো দক্ষিণ আফ্রিকার। এ অবস্থায় ম্যাচের লাগাম দক্ষিণ আফ্রিকার হাতে তুলে নেন ক্লাসেন ও মিলার। ১৪তম ওভারের শেষ দুই বলে মিলারের ১টি করে চারছক্কায় ১৪ রান পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। আর ১৫তম ওভারে প্যাটেলের ছয় বল থেকে ২টি করে চারছক্কায় ২৪ রান তোলেন ক্লাসেন। ফলে শেষ ৩০ বলে ৩০ রান দরকার পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকার।

১৭তম ওভারে আক্রমনে এসে প্রথম বলে ক্লাসেনকে তুলে নেন পান্ডিয়া। ২টি চার ও ৫টি ছক্কায় ২৭ বলে ৫২ রান করেন ক্লাসেন। ২৩ বলে টিটোয়েন্টিতে পঞ্চম অর্ধশতক করেন ক্লাসেন। মূলত ক্লাসেন আউটই ছিল ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট।

১৮তম ওভারে শেষবারের মত আক্রমনে এসে মাত্র ২ রান দিয়ে ১ উইকেট তুলে ভারতকে ম্যাচে ফেরান বুমরাহ। জানসেনকে ২ রানে বোল্ড করেন বুমরাহ। এতে শেষ ২ ওভারে ৪ উইকেট হাতে নিয়ে ২০ রান দরকার পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকার।

১৯তম ওভারে মাত্র ৪ রান দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার উপর চাপ আরো বাড়ান অর্শদীপ। ফলে শেষ ওভারে জয়ের জন্য ১৬ রানের সমীকরণ পায় প্রোটিয়ারা।

শেষ ওভারে বল করতে এসে প্রথম বলেই উইকেট তুলে নেন পান্ডিয়া। বাউন্ডারি সীমানার কাছে দক্ষিণ আফ্রিকার বড় ভরসা ডেভিড মিলারের দুর্দান্ত ক্যাচ নেন সূর্যকুমার। ১টি করে চারছক্কায় ১৭ বলে ২১ রান করেন মিলার। ওভারের শেষ বলে আরও ১ উইকেট নিয়ে পান্ডিয়া ৮ রান দিলে তীর এসে তরি ডুবে দক্ষিণ আফ্রিকার। ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৬৯ রানে থামে প্রোটিয়া ইনিংস। ভারতের পান্ডিয়া ২০ রানে ৩টি, আর্শদীপ ২০ ও বুমরাহ ১৮ রানে ২টি করে উইকেট নেন। ৭৬ রানের লড়াকু ইনিংসে ম্যাচ সেরা হন কোহলি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

ভারত : ১৭৬/, ২০ ওভার (কোহলি ৭৬, প্যাটেল ৪৭, মহারাজ ২/২৩)

দক্ষিণ আফ্রিকা : ১৬৯/, ২০ ওভার (ক্লাসেন ৫২, ডি কক ৩৯, পান্ডিয়া ৩/২০)

ফল : ভারত ৭ রানে জয়ী।

ম্যাচ সেরা : বিরাট কোহলি (ভারত)

আল/ দীপ্ত সংবাদ

আরও পড়ুন

সম্পাদক: এস এম আকাশ

অনুসরণ করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন

স্বত্ব © ২০২৩ কাজী মিডিয়া লিমিটেড

Designed and Developed by Nusratech Pte Ltd.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More