২০২৪ সালে মাঠ ও মাঠের বাইরে নানা ঘটনায় আলোচিত ছিলো দেশের ফুটবল। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল– দ্বিতীয়বারের মতো সাফের রানী হওয়া বাফুফে সভাপতি হিসেবে কাজী সালাহউদ্দিনের ১৬ বছরের রাজত্বের অবসান, কিংবদন্তী জাকারিয়া পিন্টুর প্রয়ান আর বছরের শেষ দিকে হামজা চৌধুরীকে পাওয়া।
২০২২ সালের মতো এ বছরও দক্ষিণ এশিয়ার টুর্নামেন্ট সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয় সাবিনা–ঋতুপর্ণারা। ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলার ও সিনিয়র ফুটবলারদের দ্বন্দ্বের পাশাপাশি মেয়েদের বেতন বকেয়া, সব আলোচনাকে ছাপিয়ে মাঠে সেরাটা দিয়ে আবারো সাফের রানী হয় বাংলাদেশ। দেশে ফেরার পর তাদের দেওয়া হয় ছাদ খোলা বাসে সংবর্ধনা।
সিনিয়র নারী দলের পাশাপাশি বয়স ভিত্তিক পর্যায়েও দক্ষিণ এশিয়ায় চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলার মেয়েরা। ঢাকায় সাফ অনূর্ধ্ব–১৯ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে মহানাটকীয় এক ফাইনাল শেষে ভারতের সঙ্গে যৌথ চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। এরপর নেপালে সাফ অনূর্ধ্ব–১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জেতে বাংলার বাঘিনীরা।
ছেলেদের ফুটবলে সাফল্যের গল্প শুধু সাফ অনূর্ধ্ব–২০ চ্যাম্পিয়নশিপকে ঘিরেই। সাফের বয়সভিত্তিক প্রতিযোগিতায় নেপালকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রথম কোনো শিরোপা জিতে বাংলাদেশ। তবে এএফসি এশিয়ান কাপ কোয়ালিফাইয়ারে প্রত্যাশা পূরণ করতে ব্যর্থ হয় দলটি।
আন্তর্জাতিক ফুটবলে সিনিয়রদের পারফরম্যান্স নিয়ে তুষ্ট হওয়ার মতো কিছু ছিলো না। বছরে আটটি ম্যাচ খেলে জয় মাত্র দুটিতে, বাকি সবক‘টিতে হার। আট ম্যাচে বাংলাদেশ গোল করতে পেরেছে মাত্র চারটি। একটি লেবানন এবং ভুটানের বিপক্ষে। অন্য দুটি মালদ্বীপের বিপক্ষে বছরের শেষ ম্যাচে।
২০০৮ থেকে ২০২৪, চার মেয়াদে ১৬ বছর বাফুফে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন দেশের ফুটবলের আলোচিত–সমালোচিত কিংবদন্তী ফুটবলারর কাজী সালাiউদ্দিন। পাঁচ আগষ্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর, সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। অংশ নেননি বাফুফে নির্বাচনে। ফলে দীর্ঘ সময় পর নতুন সভাপতি পায় দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থাটি। আগামী চার বছরের জন্য সভাপতি নির্বাচত হন তাবিথ আউয়াল।
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টু ১৮ নভেম্বর ইন্তেকাল করেন। মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি পাওয়ায় পিন্টু‘কে দেওয়া হয় গার্ড অব অনার। মোহামেডান ক্লাব, বাফুফে, ক্রীড়া মন্ত্রণালয় তাকে গভীর শ্রদ্ধা জানায়।
দেশের ফুটবলে বছরের শেষটা হয় সুখবর দিয়ে। প্রায় দেড় বছর ধরে ইপিএলে‘র ক্লাব লেস্টার সিটিতে খেলা বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত হামজা চৌধুরীকে নিয়ে কাজ করছিলো বাফুফে। অবশেষে বিজয়ের মাসে ফিফার তরফ থেকে সবুজ সংকেত পায় হামজা চৌধুরী। তাতে বাংলাদেশ দলের হয়ে খেলতে আর কোনো বাধা রইলো না তার।