বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) সাবেক তিনজন গভর্নর ও ছয়জন প্রাক্তন ডেপুটি গভর্নরের ব্যাংক হিসাবের তথ্য তলব করেছে।
বুধবার (১৩ আগস্ট) ব্যাংকিং খাতে দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগের অংশ হিসেবে দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুরোধের ভিত্তিতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক তিন গভর্নর হলেন— ড. আতিউর রহমান, ফজলে কবির ও আব্দুর রউফ তালুকদার। তারা আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরের শাসনকালে দায়িত্বে ছিলেন।
অভিযোগ অনুযায়ী, তাদের সময় দেশের ব্যাংকিং খাতকে পদ্ধতিগতভাবে দুর্বল করা হয়েছিল।
সাবেক ছয়জন ডেপুটি গভর্নর হলেন— সীতাংশু কুমার সুর চৌধুরী, মাসুদ বিশ্বাস, এসএম মনিরুজ্জামান, আবু হেনা মোহাম্মদ রাজী হাসান, কাজী ছাইদুর রহমান ও আবু ফরাহ মোহাম্মদ নাসের।
প্রাক্তন গভর্নরদের বিরুদ্ধে অভিযোগ
ড. আতিকুর রহমানের সময় নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্বাবধান দুর্বল ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। এর ফলে হল মার্ক ও ব্যাসিক ব্যাংক ঋণ কেলেঙ্কারি সম্ভব হয়। ২০১৬ সালের বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির কেলেঙ্কারি ধামাচাপা দিতে তিনি ‘মাস্টারমাইন্ড’ ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে, যা শেষ পর্যন্ত তার পদত্যাগের কারণ হয়।
পড়ুন: ঋণখেলাপীদের জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে না: অর্থ উপদেষ্টা
ফজলে কবিরের সময় ইসলামি ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামি ব্যাংকে এস আলম গ্রুপের বিতর্কিত অধিগ্রহণ অনুমোদনের অভিযোগ রয়েছে, যা ব্যাংকে ব্যাপক লুটপাটের পথ সুগম করেছে।
তিনি ঋণ নীতিতে শিথিলতা আনেন, সুদের হার কৃত্রিমভাবে ৯ শতাংশ রাখেন এবং ঋণখেলাপীদের সীমিত পরিশোধে ছাড় দেন।
আবদুর রউফ তালুকদার দুই বছর গভর্নর ছিলেন। তার সময়ও বিতর্কিত সিদ্ধান্তের অভিযোগ রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি পদত্যাগ করে আত্মগোপনে চলে যান।
অভিযোগে বলা হয়েছে, তার সময়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আঁতাতের মাধ্যমে ঋণ বিতরণে জালিয়াতি হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
তিন প্রাক্তন গভর্নরের মধ্যে ড. আতিকুর রহমান দেশ ছেড়ে গেছেন বলে মনে করা হয়, যদিও তার পাসপোর্ট ব্লক করা হয়েছে। ফজলে কবির দেশের মধ্যে রয়েছেন কিন্তু প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। আবদুর রউফ তালুকদার ৫ আগস্টের পর গোপন রয়েছেন, তবে দেশে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তদন্তের আওতায় ডেপুটি গভর্নররাও
প্রাক্তন ডেপুটি গভর্নরের মধ্যে সীতাংশু কুমার সুর চৌধুরী ও মাসুদ বিশ্বাস বর্তমানে আইন বর্হিভূত আয়ের মামলায় কারাগারে আছেন।
বাকি অভিযুক্তরা হলেন—
এসএম মনিরুজ্জামান: ব্যাংক পরিদর্শন বন্ধ রাখা।
রাজী হাসান: মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে ব্যর্থ।
কাজী সাইদুর রহমান: বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি।
আবু ফারাহ মোহাম্মদ নাসের: ঋণ নীতি শিথিল করে ব্যাংকিং খাতকে দুর্বল করা।
আল