রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার মাচালংয়ে দুই কর্মীকে খুনের ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার (৭ জানুয়ারি) সাজেক ভ্যালি পর্যটন সড়কসহ সাজেক ইউনিয়নে সকাল–সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ ডেকেছে ইউপিডিএফ।
মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) বাঘাইছড়ি ইউনিট এক বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে সড়ক অবরোধের ডাক দিয়েছে।
এর আগে, রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের মাচালং ব্রিজপাড়ায় দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হন ইউপিডিএফ কর্মী দীপায়ন চাকমা ও আশীষ চাকমা।
এ ঘটনার পর মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় নিহত আশীষ ও দীপায়ন চাকমার মরদেহের কফিন সহকারে মৈত্রী পাড়া থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি মাচালং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে গিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করে। সমাবেশে স্থানীয় বাসিন্দা ও দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশ শুরুর আগে আনুষ্ঠানিকভাবে ইউপিডিএফ, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম, পিসিপি, নারী সংঘ, নিহতের পরিবারবর্গ ও এলাকাবাসী নিহতদের মরদেহের কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে নিহতদের উদ্দেশ্যে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। সমাবেশে ইউপিডিএফ সংগঠক সুমন চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফের সাজেক ইউনিটের প্রধান সংগঠক অডিট চাকমা, গণতান্ত্রক যুব ফোরামের সাজেক থানা শাখার সভাপতি নিউটন চাকমা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের কেন্দ্রীয় সদস্য উজ্জলা চাকমা।
ইউপিডিএফ নেতা অডিট চাকমা বলেন, “আশিষ ও দীপায়ন চাকমা জুম্ম জাতির অধিকার আদায়ের স্বার্থে লড়াই–সংগ্রাম করে যে শহীদ হয়েছেন; জাতি তাদের কখনো ভুলতে পারবে না। জুম্ম জাতির কাছে তারা চির অমর হয়ে থাকবেন।”
আরও পড়ুন: সাজেকে ইউপিডিএফ’র দু’জন নিহত
সমাবেশ থেকে ইউপিডিএফের সাজেক ইউনিটের প্রধান সংগঠক অডিট চাকমা হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে আগামীকাল বুধবার সাজেকের পর্যটন সড়কসহ সাজেক ইউনিয়নে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেন এবং অবরোধ কর্মসূচি সফল করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রসঙ্গত, রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের মাচালং ব্রিজপাড়ায় দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হন ইউপিডিএফ কর্মী দীপায়ন চাকমা ও আশীষ চাকমা। এ ঘটনার পর নিহতদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে সাজেক থানা পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে সোমবার সন্ধ্যায় নিহতদের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ।
মাচালংয়ে জোড়া খুনের ঘটনায় প্রসিত খীসার নেতৃত্বাধীন ইউপিডিএফ সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতিকে (জেএসএস) দায়ী করলেও জেএসএস এই অভিযোগ প্রত্যাখান করেছে। গত ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে খাগড়াছড়িতে দুইটি পৃথক ঘটনায় ইউপিডিএফের ছয় নেতাকর্মী ও রাঙামাটিতে ৪ ফেব্রুয়ারির জোড়া খুনসহ দুই মাসের মধ্যে ইউপিডিএফের ৮ নেতাকর্মী খুন হলেন।
মিশু দে / আল / দীপ্ত সংবাদ