দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসাবে মনোনীত করা হয়েছে শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে। তার নেতৃত্বে গঠিত হতে যাচ্ছে নতুন এই সরকার। এ সরকারের বাকি সদস্যদের নাম রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত করা হবে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত ওই সরকার দায়িত্ব পালন করবে।
ছিলেন শিক্ষকতা পেশায়। সেখান থেকে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা ও ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম। এর ফলে ২০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেই থেকে বিশ্বজুড়ে তার সুনাম।
১৯৪০ সালের ২৮ জুন চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে জন্ম ইঊনূসের। চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় ১৬তম স্থান অধিকার করেন তিনি। ১৯৫৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৬০ সালে স্নাতক ও ১৯৬১ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।
১৯৬২ সালে চট্টগ্রাম কলেজে প্রভাষক পদে যোগ দেন ড. ইউনূস। ১৯৬৫ সালে ফুলব্রাইট স্কলারশিপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যান এবং ভ্যান্ডারবিল্ট ইউনিভার্সিটি থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি করেন। ১৯৬৯ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত সেখানে শিক্ষকতা করেন তিনি।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ড. ইউনূস বিদেশে জনমত গড়ে তোলেন। ১৯৭২ সালে দেশে ফিরে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে শিক্ষকতা শুরু করেন। ১৯৭৫ সালে তিনি অধ্যাপক পদে উন্নীত হন এবং ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত এ পদে কর্মরত ছিলেন।
দারিদ্র্য দূরীকরণের লক্ষ্যে ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠা করেন গ্রামীণ ব্যাংক। চালু করেন ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম। জামানতবিহীন ও যৌথ দায়দায়িত্বভিত্তিক ক্ষুদ্র ঋণের সাফল্য, ২০০৬ সালে তাকে এবং তার গ্রামীণ ব্যাংককে এনে দেয় শান্তিতে নোবেল পুরস্কার।
এ পর্যন্ত ৪২টি দেশে ১৩২টি প্রতিষ্ঠান অনুসরণ করেছে গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষুদ্রঋণ মডেল। কিন্তু গত দেড় দশক তিনি দেশে কোণঠাসা ছিলেন। কর্তৃত্ব হারিয়েছিলেন নিজের প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকের। জড়ানো হয়েছিল মামলা–মোকদ্দমায়।
ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে সরকার গঠনের পাঁচ মাসের মাথায় সোমবার (৫ আগস্ট) পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে যান শেখ হাসিনা। এরইমধ্যে জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) বৃহস্পতিবার ড. ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত যাচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।