দেশের সরকারি স্কুল–কলেজের শিক্ষকদের অর্জিত পিএইচডি ডিগ্রি তাঁদের শিক্ষাদান বিষয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত বলে মনে করে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)।
‘শিক্ষক কর্তৃক পিএইচডি অভিসন্দর্ভ ও শিক্ষাদান সংশ্লিষ্ট বিষয়ের সামঞ্জস্য নিরূপণ’ শীর্ষক একাডেমিক সেমিনারের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন ইউজিসির গবেষণা সহায়তা ও প্রকাশনা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য প্রফেসর ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন।
বিভিন্ন সরকারি স্কুল ও কলেজের ১১ জন শিক্ষকের পিএইচডি অভিসন্দর্ভ মূল্যায়নপূর্বক শিক্ষাদান সংশ্লিষ্ট বিষয়ের সাথে অর্জিত ডিগ্রির সামঞ্জস্য নিরূপণে মঙ্গলবার ইউজিসি এই একাডেমিক সেমিনারের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আবদুর রশিদ, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. কামরুল আলম খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. আব্দুল হালিম, প্রফেসর ড. রুবিনা খান ও প্রফেসর ড. আখতার হোসেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জালাল আহাম্মদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. বশির আহমেদ, প্রফেসর ড. আলমগীর কবির ও প্রফেসর ড. সৈয়দ হাফিজুর রহমান, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. আশরাফুল আলম এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মিল্টন বিশ্বাস অংশগ্রহণ করেন। ইউজিসি’র গবেষণা সহায়তা ও প্রকাশনা বিভাগের পরিচালক ড. মো. ফখরুল ইসলাম সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর সাজ্জাদ হোসেন বলেন, দেশে গুণগত শিক্ষা ও গবেষণার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে ইউজিসি কাজ করে যাচ্ছে। সরকারি স্কুল–কলেজ শিক্ষকদের পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন তাদের কর্মক্ষেত্রের সাথে সামঞ্জস্য কিনা সেটি যৌক্তিকতা নির্ধারণ করা প্রয়োজন। পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনে আর্থিক প্রণোদনা প্রদান করা হয়। আর্থিক বিষয় যুক্ত হওয়ায় এক্ষত্রে স্বচ্চতা নিশ্চিত করা দরকার।
তিনি আরও বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের গবেষণা ও উদ্ভাবনের কোন বিকল্প নেই। গবেষণা ও উদ্ভাবন দরকার দেশের প্রয়োজনের নিরিখে। শিক্ষকদের অর্জিত পিএইচডি ডিগ্রি জাতির কোন কল্যাণে আসছে কিনা সেটি দেখতে হবে। ইউজিসি বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে সরকারি স্কুল–কলেজের শিক্ষকদের পিএইচডি ডিগ্রির সামঞ্জস্য নিরূপণ সুচিন্তিতভাবে করা হবে বলে তিনি জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের গবেষণার সংস্কৃতি গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে প্রফেসর সাজ্জাদ হোসেন বলেন, প্রত্যেক গবেষকের একাডেমিক প্রোফাইল ও গবেষণার তথ্য ওয়েবসাইটে নিয়মিত প্রকাশ করার প্রয়োজন। ইন্ডাস্ট্রি–একাডেমিয়া কোলাবোরেশন বৃদ্ধির জন্য গবেষকদের উৎসাহ প্রদান করা জরুরি। এছাড়া, দেশি ও বিদেশী প্রতিষ্ঠানসমূহ গবেষণার তথ্য ব্যবহার করে বাংলাদেশে যেন বিনিয়োগে আকৃষ্ট হয় সে ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
তিনি আরও বলেন, দেশে গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করা ও গবেষণা কর্মকাণ্ড পরিচালনায় ইউজিসি কাজ করছে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বৈদেশিক স্কলারশিপের জন্য প্রথম পর্যায়ে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। এছাড়া, গবেষণায় এ বছর বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে যার পরিমান ১৭৪ কোটি টাকা।
ইউজিসির গবেষণা সহায়তা ও প্রকাশনা বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো. শাহীন সিরাজ– এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
আল/দীপ্ত সংবাদ