বরগুনা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আব্দুর রশীদকে প্রকাশ্যে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মাহাবুবুল আলম ফারুক মোল্লার ছেলে শাওন মোল্লাকে প্রধান আসামি করে বরগুনা থানায় একটি মামলা হয়েছে।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে ভুক্তভোগী ওই মুক্তিযোদ্ধা অভিযোগ করলে থানায় তা এজাহার হিসেবে গণ্য হয় বলে জানান, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. দেওয়ান জগলুল হাসান। মামলায় অভিযুক্ত শাওন মোল্লার নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়েছে, রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে প্রবেশ করার সময় ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশীদকে অভিযুক্ত শাওন উদ্দেশ্যমূলকভাবে গালিগালাজ করে এবং প্রকাশ্যে জনসম্মুখে মারধর করে।
এ ব্যাপারে বরগুনা জেলা পুলিশ সুপার মো. ইব্রাহিম খলিল বলেন, ‘সিনিয়র সিটিজেন এবং একজন মুক্তিযোদ্ধাকে মারধর করা একটি নিন্দনীয় ঘটনা। যতটুকু ঘটনা হয়েছে সে আলোকে মামলা হয়েছে।’
এ বিষয়ে বরগুনা জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ূন হাসান শাহীন বলেন, ‘শাওন মোল্লা বিএনপির কোনো কমিটির সদস্য নন। তার বাবা সাবেক কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন; দল সেই কমিটি বাতিল করে দিয়েছে। ফলে, দলে তারও (ফারুক মোল্লা) কোনো পদ-পদবী নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘শাওনের একজন বয়স্ক মানুষকে হেনস্তা করা ঠিক হয়নি। শাওনের এই কাজের দায়ভার বিএনপির নয় এটি তার একান্ত ব্যক্তিগত।’
এদিকে, বরগুনা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য আবদুর রশিদ মিয়াকে প্রকাশ্যে হেনস্তার ঘটনায় নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন বিএনপি নেতার ছেলে শাওন মোল্লা। ঘটনার ব্যাখ্যা করতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের আইডিতে ‘লাইভ’ করেছেন তিনি।
লাইভে শাওন বলেন, ‘তিনি (আবদুর রশিদ) একজন বয়স্ক ব্যক্তি, তার সঙ্গে এমন আচরণ করা ঠিক হয়নি। তবে আমি কোনো মুক্তিযোদ্ধার অসম্মান করিনি। আমার দলের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, নেতা তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করায় আমি নিজেকে সংযত রাখতে পারিনি।” শাওন আরও বলেন, “বয়স বিবেচনায় একজনের গায়ে হাত তোলা যদি অন্যায় হয়ে থাকে তবে আমি দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাই।’
এই ঘটনার পর শাওন মোল্লা স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রশিদকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার জেরে দুজনের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়, যা একপর্যায়ে মারধরে রূপ নেয়। শাওন আরও দাবি করেন, মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় তার বাবা মাহবুবুল আলমের নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আবদুর রশিদ তার কাছ থেকে তিন লাখ টাকা নিয়েছেন।’
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আবদুর রশিদ মিয়া। তিনি বলেন, ‘আমি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গেলে শাওন আমাকে ডেকে বাইরে নিয়ে যায় এবং গালিগালাজ করে হেনস্তা করে।’
শাহ্ আলী/দীপ্ত নিউজ