ভারতের ছত্তিশগড় রাজ্যের নারায়ণপুর ও দান্তেওয়াড়া সীমান্তের দুর্গম পাহাড়–জঙ্গলঘেরা এলাকায় দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে দীর্ঘ সংঘর্ষে অন্তত ২৬ জন মাওবাদী নিহত হয়েছেন। এনডিটিভি ও স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে, বুধবার (২১ মে) অভিযান চলাকালে এই সংঘর্ষ হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নিহতদের মধ্যে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী) বা সিপিআই (মাওবাদী)-এর শীর্ষ নেতা নাম্বালা কেশবরাও ওরফে বাসভরাজুর নামও থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি সংগঠনটির সাবেক সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের প্রধান ছিলেন এবং পরবর্তীতে সাধারণ সম্পাদক হন। এছাড়া নিহতদের মধ্যে দণ্ডকারণ্য স্পেশাল জোনাল কমিটির শীর্ষ নেতা মধুরও মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
নারায়ণপুর, বিজাপুর, দান্তেওয়াড়া ও কোন্ডাগাঁও জেলার সীমান্তবর্তী আবুঝামাদ এলাকায় মাওবাদীদের শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতির খবর পেয়ে সেখানে অভিযানে নামে ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ড (ডিআরজি)। প্রায় ৫০ ঘণ্টা ধরে চলা অভিযানে মুখোমুখি সংঘর্ষে এই প্রাণহানি ঘটে।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র অনুযায়ী, বাসভরাজু ছিলেন নিরাপত্তা বাহিনীর তালিকাভুক্ত ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ মাওবাদী নেতা। তার ওপর অন্ধ্রপ্রদেশ ও তেলেঙ্গানা রাজ্যে ১ কোটি ৫০ লাখ রুপি পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল।
ছত্তিশগড়ের উপ–মুখ্যমন্ত্রী অরুণ সাও বলেন, ‘এই অভিযান মাওবাদীদের জন্য একটি বড় ধাক্কা। আমরা ২০২৬ সালের মধ্যে রাজ্যকে সম্পূর্ণ মাওবাদীমুক্ত করার প্রতিশ্রুতিতে অটল।‘
তিনি আরও বলেন, ‘৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যেও সাহসিকতার সঙ্গে অভিযান চালিয়ে সফলতা অর্জনের জন্য আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিজয় শর্মা এবং সংশ্লিষ্ট বাহিনীকে অভিনন্দন জানাই।‘
প্রসঙ্গত, মাত্র এক মাস আগেই মাওবাদী উপস্থিতি রোধে ‘অপারেশন ব্ল্যাক ফরেস্ট’ চালু করে ছত্তিশগড়ের নিরাপত্তা বাহিনী। ২১ দিনব্যাপী ওই অভিযানে ৩১ জন মাওবাদী নিহত হয়, যাদের মধ্যে অনেকের মাথার ওপর বিপুল অঙ্কের পুরস্কার ছিল। ধ্বংস করা হয় ২১৪টি আস্তানা ও বাঙ্কার, জব্দ করা হয় বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক ও অস্ত্রশস্ত্র। উদ্ধার করা হয় প্রায় ১২ হাজার কেজি খাদ্যসামগ্রী।