মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, সমাজ সেবক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া রচিত ‘আমার স্মৃতি আমার কথা’ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সোনাইমুড়ী অন্ধ কল্যান সমিতি চক্ষু হাসপাতাল মিলনায়তনে প্রকশানা উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. দিদার–উল–আলম।
নোয়াখালী সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর কাজী মো. রফিক উল্যার সভাপতিত্বে এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, প্রকাশনা উৎসব কমিটির সদস্য সচিব মনীন্দ্র কুমার মজুমদার ও গ্রন্থের রচয়িতা বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া। মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন চৌমুহনী সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও বাংলাদেশ স্কাউট নোয়াখালী জেলা শাখার কমিশনার প্রফেসর আবুল বাশার।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত সচিব (অব) বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম মিলন, অতিরিক্ত সচিব (অব) আতাউর রহমান, সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসমাইল হোসেন, সোনাইমুড়ী অন্ধ কল্যাণ সমিতির সিনিয়র সহ–সভাপতি মমিনুল ইসলাম বাকের, জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান বাহার, হাতিয়া ডিগ্রী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ এনামুল হক, নোয়াখালী জেলা মাধ্যমিক স্কুল সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম।
বইটিতে যুদ্ধকালীন মুক্তি সংগ্রামের শুরু থেকে মুক্তিযুদ্ধে দুঃসহ স্মৃতির কথা, দুইজন মুক্তিযোদ্ধার জীবন উৎসর্গের করুন গাঁথা,এ সময়কার রাজনীতি,মুক্তিযুদ্ধকালীণ তিনদিনের দিনপঞ্জি,মুক্তিযুদ্ধে তথ্য কণিকা,মুক্ত নোয়াখালী, মুজিব বাহীনি (বিএলএফ) গঠন, জাসদ রাজনীতি, বঙ্গবন্ধুকে কাছ থেকে দেখা, জেল জীবনের স্মৃতি, সোনাইমুড়ী অন্ধ কল্যাণ সমিতি, গণপাঠাগারসহ বিভিন্ন বিষয় নিবিড়ভাবে ফুটে উঠেছে।
অনুভুতি প্রকাশ করে বইয়ের রচয়িতা বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ও স্বাধীনতা অর্জনে আমি প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেছিলাম। আমি একজন সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গর্ববোধ করি। আমার অনেক অর্জন ও অনেক কস্টের স্মৃতি রয়েছে। জীবনের নিয়মে আমরা সবাই একদিন চলে যাব কিন্তু তার আগে জীবনের কিছু স্মৃতি ও অনুস্মৃতি পরবর্তী প্রজন্মের জন্য রেখে যেতে পারি তাহলে তারা জানবে এ দেশ কিভাবে কারা বাস্তবায়ন করে গেছেন। উত্তরাধিকারিদের ওপর নতুন প্রজন্মের ওপর স্বাধীনতা রক্ষার দায় বর্তাবে। আর এ তাগিদেই বইটি লেখা আমার প্রয়াস ছিল।
মুখ্য আলোচক চৌমুহনী সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ আবুল বাসার বলেন ,মহান মুক্তিযুদ্ধে একজন সক্রিয় মুক্তিযোদ্ধা ও একজন সফল সংগঠক হিসেবে গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া পরিচিত। মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী রাজনৈতিক আস্থায় সমাজ পরিবর্তনের অঙ্গিকার তাঁর অবস্থানই প্রমাণ করে। একজন নিবেদিত প্রাণ গণমানুষের মুক্তির জন্য লড়ে যাওয়ার এবংর সংগঠিত করার প্রত্যয় তাঁর মধ্যে আমরা দেখতে পাই।
বিশেষ অতিথি অতিরিক্ত সচিব (অব) আতাউর রহমান বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া একজন সৎ, পরোপকারী ও নিবেদিত সমাজকর্মী। নির্লোভ এ মানুষটির মধ্যে যদি লোভ লালসা থাকতো তাহলে আরও ওপরে ওঠতে পারতো। ২০০৭ সালে আমি সোনাইমুড়ী উপজেলার নির্বাহী অফিসার থাকাকালীন সাদা মনের একজন মানুষ হিসেবে তাঁর নাম লিখিত প্রস্তাব আকারে মন্ত্রনালয়ে পাঠিয়েছিলাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ দিদার–উল–আলম বলেন, মানুষের জীবনকাল অনেক ছোট কিন্তু তার কর্মকাল অনেক বড়। একাগ্রতা, অধ্যাবসায়, অলসতা যার ভিতরে নেই, শৃঙ্খলা, সবচেয়ে বড় হলো সততা। এ প্রতিটি গুনের অধিকারী বীরমুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া। আর তাই তিনি কখনো মারা যাবেন না। তিনি এ সমাজের মানুষরে মাঝে বেঁচে থাকবেন তাঁর মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ ও পরবর্তী মানুষের কল্যাণে সমাজ বিনির্মানে তাঁর কর্মের মধ্যে দিয়ে।
‘আমার স্মৃতি আমার কথা’ বইটির প্রকাশক রাবেয়া বসরী সুবর্ণা। ১৯০ পৃষ্ঠার বইটির মুল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০০ টাকা।
নাসিম শুভ/মোরশেদ আলম/দীপ্ত নিউজ