গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক জাহাঙ্গীর আলমের নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের কথা এখন মানুষের মুখে মুখে। মেয়র হিসেবে তিন বছর দায়িত্ব পালনকালে লুটপাটের অজস্র অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। জিসিসি’র প্রতিটি ক্ষেত্র ছুঁয়েছে তার দুর্নীতির হাত। বালু ভরাট, সড়ক প্রশস্তকরণ– এমনকি বিশ্ব ইজতেমার জন্য বরাদ্ধের টাকাতেও ভাগ বসিয়েছেন জিসিসির সাবেক এ মেয়র ও তার অনুসারীরা।
অবশ্য দুর্নীতির বিষয়টি অপপ্রচার বলে দাবী করেছেন তিনি ।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন অনেকটা নিজের ব্যক্তিগত সম্পত্তির মতো ব্যবহার করেছেন সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। মেয়র ও দলীয় পদ ব্যবহার করে নানা অপকর্ম, ‘দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডর পাশাপাশি অসংখ্য পরিবারকে সর্বশান্ত করে শত–শত কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে ।
তিনটি শিল্প কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছ হোল্ডিং ট্যাক্স জমা, ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন ও প্ল্যান অনুমোদনের নামে আড়াই কোটি টাকা আত্নসাৎ ,‘বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের কাজের নামে ৫ কোটি টাকা, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের নামে প্রায় ২ কোটি টাকারও বেশি টাকা পকেটে হাতিয়ে নিয়েছেন মেয়র জাহাঙ্গীর। এমনকি নগর ভবনের লিপ্ট স্থাপন না করেই আরো কোটি টাকা খরচ দেখানো হয়েছে।
এদিকে, সিটি করপোরেশনের অনেক এলাকায় সড়ক নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহন ছাড়াই জনগণের ঘরবাড়ি ভাংচুর করলেও কোন ক্ষতিপূরণ পায়নি ভোক্তভোগীরা। তবে, সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম দুর্নীতির বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, তার বিরুদ্ধে আনিত সব অভিযোগই মিথ্যা। যে টাকা বরাদ্ধই হয়নি সেখানে দুর্নীতি হবে কিভাবে ?
এবিষয়ে আওয়ামীলীগের মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খান গণসংযোগ কালে সিটি করপোরেশনের উন্নয়নের জন্য ৪ ধাপে বরাদ্দ দেয়া প্রায় সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকার সঠিক ব্যবহার হয়নি। সাবেক এ মেয়রের নানা দুর্নীতির কথাও তুলে ধরে বলেন, এটা অস্বীকার করার কোন সুযোগ নেই ।
২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর গাজীপুর সিটির মেয়র পদ থেকে জাহাঙ্গীর আলমকে বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এর আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটূক্তি ও মুক্তিযুদ্ধে বীর শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে একই বছরের ১৯ নভেম্বর দলীয় সদস্যপদ থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়।
এর আগে, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে জাহাঙ্গীর আলম ২০২১ সালের নভেম্বরে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ হারিয়েছিলেন। পরবর্তীতে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে স্থায়ী বহিষ্কার হন তিনি।
আল/দীপ্ত সংবাদ