নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানামুখী আলোচনার মধ্যে অর্ধযুগেরও বেশি সময় পর বর্ধিত সভা করছে বিএনপি। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হল প্রাঙ্গণে এ সভা শুরু হবে।
সভায় দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যবৃন্দ, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যরা ছাড়াও জেলা, উপজেলা, বিভিন্ন মহানগরী ও মহানগরীর এলাকাধীন থানাগুলোর সভাপতি/আহ্বায়ক এবং সাধারণ সম্পাদক–সদস্য সচিবরা উপস্থিত থাকবেন।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আহুত এই বর্ধিত সভা দেশের সার্বিক প্রেক্ষপট বিবেচনায় খুবই গুরুত্ববহ। এ বর্ধিত সভা থেকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম সম্পর্কে নানা কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ এবং এসব বিষয়ে কার্যকর দিকনির্দেশনা প্রদান করা হবে।
বিএনপি’র কেন্দ্রীয় এবং তৃণমূলের নেতারা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দিকনির্দেশনার অপেক্ষায় রয়েছেন।
দলের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, পট পরিবর্তনের পর থেকেই বিএনপি’র সব ধরনের মনোযোগ রয়েছে জাতীয় নির্বাচন কেন্দ্রীক। আগামীকাল বৃহস্পতিবার দলের যে বর্ধিত সভা ডাকা হয়েছে, কার্যত সেখান থেকেই বিএনপি’র নির্বাচনমুখী যাত্রা শুরু হবে।
সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানিয়েছে, সম্প্রতি বিভিন্ন মহল থেকে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানের যে দাবি উঠেছে, সেবিষয়ে খুব একটা গুরুত্ব দেবে না বিএনপি। তবে, জাতীয় নির্বাচনকে মুখ্য করেই পরবর্তী সাংগঠনিক কর্মসূচি তৈরির নীতিগত সিদ্ধান্ত এই বর্ধিত সভা থেকে সকলকে জানানো হবে। পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতরের পরপরই নির্বাচন–কেন্দ্রিক কর্ম–তৎপরতা চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও এ বর্ধিত সভা থেকে দেওয়া হবে। সবমিলিয়ে বলা য়ায়, দলের বর্ধিত সভার মধ্যদিয়ে নির্বাচনমুখী কার্যক্রম শুরু করবে বিএনপি।
এদিকে, বিএনপি’র বর্ধিত সভাকে দলের ছায়া কাউন্সিল হিসেবেও দেখছেন অনেকে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ ও পর্যবেক্ষরা মনে করেন, চলমান পরিস্থিতিতে বিএনপি’র এই বর্ধিত সভা ও বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে থাকবে। কারণ, দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যরা ছাড়াও উপজেলা পর্যায়ের সভাপতি–সাধারণ সম্পাদক বা আহবায়ক–সদস্য সচিবরা এ বর্ধিত সভায় অংশ গ্রহণ করছেন।
প্রায় ৪ হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে এই সভা থেকে আগামী নির্বাচন, আন্দোলনের প্রস্তুতিসহ কর্মপরিকল্পনা নির্ধারিত হবে। তৃণমূলের বক্তব্য শুনবেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, দেবেন দিক–নির্দেশনামূলক নতুন বার্তা। তবে, এ বর্ধিত সভায় তৃণমূলের নেতাকর্মীদের বক্তব্য ও মতামতকে প্রাধান্য দেবে বিএনপি।
জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হল মাঠে বর্ধিত সভা অনুষ্ঠানের জন্য ইতোমধ্যেই সকল প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্নের পথে।
বুধবার বিকেলে বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম–মহাসচিব রুহুর কবির রিজভী এলডি হল মাঠ পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের জানান, ‘আমাদের বর্ধিত সভার প্রস্তুতি কাজ পুরোদমে চলছে, রাতের মধ্যে আমাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। আগামীকাল সকাল ১০টায় এই সভা শুরু হবে। সভা সংক্রান্ত আমাদের প্রস্তুতিও পুরোদমে চলছে। আমন্ত্রিত নেতৃবৃন্দ যারা আসবেন তাদের খাওয়া–দাওয়া, ডাইনিং, স্যানিটেশন, চিকিৎসা সেবা প্রভৃতি বিষয়ে আমাদের যারা দায়িত্বে আছেন তারা তদারকি করছেন।’
রিজভী বলেন, এলডি হল মাঠে স্বাস্থ্য সেবার ব্যবস্থাও থাকছে। যেখানে সার্বক্ষণিক তিনটি অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত থাকবে। একটি ফিল্ড হাসপাতাল থাকবে, যেখানে কিছু বেড থাকবে জরুরি চিকিৎসা সেবা দেবার জন্য।
বর্ধিত সভা থেকে কি বার্তা আসতে পারে সে প্রসঙ্গ জানতে চাওয়া হলে রুহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, ‘যে সব নেতারা বর্ধিত সভায় আসবেন অর্থাৎ যাদের ডাকা হয়েছে তাদের বক্তব্যের ওপর ভিত্তি করে অর্থাৎ তারা কী চান– এত বড় আন্দোলন গেলো, আরও নানা বিষয় আছে যেসব ব্যাপারে কী ধরনের প্রস্তাব গ্রহণ করা যায় তাদের বক্তব্যের মধ্য দিয়েই সেটি চলে আসবে বলে আমি মনে করি।’
আল