ফেলে দেয়া কলাগাছ থেকে প্রক্রিয়াজাতের মাধ্যমে সুতা তৈরি করে সেই সুতা দিয়ে তৈরি হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন শাড়ি। দেশে এ প্রথম কলাগাছের সুতা থেকে শাড়ি তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন এর উদ্যোক্তা জেলা প্রশাসক ইয়ামিন পারভীন তিবরীজি।
জানা যায়, পাহাড়ে নারীদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে ২০২১ সালে নিজ উদ্যোগে কলাগাছ থেকে সুতা তৈরির একটি প্রকল্প গ্রহন করেন জেলা প্রশাসক। এ প্রকল্পের আওতায় জেলার বিভিন্ন পাড়ায় কলাগাছ থেকে সুতা তৈরির প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। পরে সে সুতা থেকে বিভিন্ন সৌখিন হস্তশিল্প তৈরির প্রশিক্ষণও দেয়া হয় বেকার নারীেদর। রুমা, লামা, আলীকদম ও বান্দরবান সদরসহ জেলায় ১৫০ জনকে দেয়া হয় বিভিন্ন জাতের হস্তশিল্প তৈরির কাজ।
এদিকে, অবিশ্বাস হলেও সত্য যে পরিত্যক্ত কলা গাছ থেকে সুতা তৈরি করে আর সেই সুতা দিয়ে এবার জামদানি ডিজাইনের শাড়ি তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
জানা গেছে, কলাগাছের সুতা থেকে শাড়ি তৈরিতে বান্দরবানের জেলা প্রশাসকের আহবানে সাড়া দিয়ে সুদূর মৌলভীবাজার থেকে বান্দরবানে ছুটে এসেছেন তাঁত শিল্পী রাধাবতী দেবী।
রাধাবতী দেবী জানান, বাংলাদেশে বিভিন্ন সুতা দিয়ে শাড়ি তৈরি হয়, তবে দেশে প্রথমবার আমি বান্দরবানের জেলা প্রশাসকের অনুরোধে ও সার্বিক সহযোগিতায় কলাগাছের সুতা থেকে একটি শাড়ী তৈরি করলাম।
এ শাড়ি তৈরিতে ১৫ দিন সময় লেগেছে বলে জানান রাধাবতী। তবে সবকিছু ঠিক থাকলে আগামীতে আরো কম সময়ে ও কম খরচে আরো মসৃণ ও উন্নতমানের শাড়ী তৈরি করা সম্ভব হবে বলেও জানান তিনি।
বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়র প্রভাষক ও নারী উদ্যোক্তা সাইং সাইং উ বলেন, এই শাড়ি তৈরির ফলে বাংলাদেশে বান্দরবানের নাম আরেকবার প্রচার হবে এবং এখানকার কলাগাছের আশ থেকে যে সুতা হয় সেই সুতা দিয়ে পরিবেশবান্ধব শাড়িটি সকলের কাছে দ্রুত সময়ে পৌঁছে যাবে বলে মনে করেন তিনি।
জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি বলেন, বান্দরবানে নারীদের উন্নয়নের কথা চিন্তা করে জেলা প্রশাসন একটি পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করে। সে প্রকল্পের আওতায় জেলা উপজেলায় নারীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক আরো জানান, কলাগাছের সুতা দিয়ে দেশে এ প্রথম আমরাই দৃষ্টনন্দন শাড়ি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি। তবে এ সুতাকে আরো মসৃন ও নরম করতে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। তাদের সহযোগিতা পেলে ভবিষ্যতে আরো উন্নতমানের শাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে বলেও আশাবাদী তিনি।
এফএম/দীপ্ত সংবাদ