বুধবার, মে ১৪, ২০২৫
বুধবার, মে ১৪, ২০২৫

পেন্সিলের জীবন বৃত্তান্ত !

পেন্সিলের জীবন বৃত্তান্ত নিয়ে বিস্তারিত লিখেছেন আবদুল্লাহ মজনু

Avatar photoদীপ্ত নিউজ ডেস্ক
প্রকাশ: সর্বশেষ সম্পাদনা:

একটা চমৎকার পেন্সিল আর একটুকরো স্বপ্ন আপনাকে উচ্চতর শিখরে নিয়ে যেতে পারে’ ফরাসি দেশে এমন প্রবাদ প্রচলিত আছে পেন্সিল নিয়ে। শিল্পের দেশে এর কদর থাকলেও যুগে যুগে পেন্সিলের প্রয়োজনীয়তা বেড়েছে পৃথিবী ব্যাপি।

আজকের পেন্সিলের রুপ-কাঠামো তো এর একদিনে অবস্থানে আসেনি। তবে সময়ের সাথে প্রযুক্তির হাত ধরে অনেক কিছুই পরিবর্তন হয়ে আসছে। তেমনি কিছু আবিস্কার তার স্থান ধরে রাখে যুগের পর যুগ। আর আদিম সভ্যতার এক আবিস্কার মানুষের বিশ্বস্ত নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে আছে পেন্সিল।

ছোটবেলার লেখালেখি ও ছবি আঁকার হাতেখড়ির মধ্যে দিয়ে পেন্সিল জড়িয়ে আছে আমাদের জীবনে। পেন্সিল শব্দটি এসেছে লাতিন শব্দ ‘ পেন্সিলাস’ থেকে যার অর্থ ছোট লেজ।

পেন্সিল

মিশরের গুহাবাসীর হাত ধরে পেন্সিলে ব্যবহার শুরু হয়েছিল, মোটা ও সরু একটুকরো পাথর যা শুধু দাগটানার কাজে ব্যবহার করতো। কিন্তু আধুনিক পেন্সিলের যাত্রা ৫শত বছর পূর্ব থেকে শুরু। এর মূল উপাদান গ্রাফাইট।

১৫৬৫ সালে ইংল্যান্ডে প্রথম গ্রাফাইট খনি আবিস্কার হয়েছিল। কিন্তু বোমার কাজে গ্রাফাইট ব্যবহার হওয়াতে গ্রাফাইট খনিগুলো বৃটিশ সরকার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। যার প্রভাব অন্য দেশ গুলোতে পরে।

১৬০৬ সালে ফরাসি চিত্রশিল্পী নিকোলাস জ্যাকুয়েস কান্তে আট দিনের অক্লান্ত পরিশ্রমে পেন্সিল কে নতুন ভাবে আবিস্কার করেন। যা ছিল অল্প গ্রাফাইট, বালি ও কাঠের গুড়ার মিশ্রণকে ৪ হাজার ডিগ্রীকে উত্তাপ দিলে পেন্সিলের গ্রাফাইট হয়ে। কান্তে কে মনে করা হয় আধুনিক পেন্সিলের জনক।

১৭৮৮ সালে আমেরিকার আলমারি নির্মাতা উইলিয়াম মানরে কাঠের খাপে গ্রাফাইট শিষ ঢুকিয়ে পেন্সিল ব্যবহার ব্যবহার করেন। তখন থেকে আজ অব্দি কাঠের সাথে পেন্সিল ব্যবহার হয়ে আসছে। যা আমরা এক নামে ‘কাঠ পেন্সিল’ বলে থাকি। শুরুর দিকে পেন্সিলের দাগ মুছার জন্য বাসি রুটি ব্যবহার করা হতো।

 

১৮৫৭ সালে ৩০ মার্চ হাইমেন লিপম্যান পেন্সিলের দাগ মোছার জন্য গাছের কষকে গলিয়ে সিলিকন ধাতব পদার্থ বানিয়ে পেন্সিলের মাথায় যুক্ত করেন। যার নাম হয় ইরেজার বা রাবার। এই দুয়ের মধ্য দিয়ে পেন্সিল হয়ে উঠে আর্কষনীয় লেখা বা ছবি আকার উপকরণ। ‘ভুল করলে শুধরানো যায়’ মানে লেখা বা আঁকা আকিতে ভুল হলে মুছে নতুন করে শুরু করা যায়। তারপর থেকে পেন্সিলের আর থামতে হয়নি। এর মধ্য দিয়ে শুরু হয় পেন্সিলে বাণিজ্যিক যাত্রা।

পেন্সিল

জনপ্রিয়তা ও বিখ্যাত কোম্পানি ফেবার-কাসেল, প্রার হার্ড ফেবার, ঈগল পেন্সিল, জেনারেল পেন্সিল, ফিলা গ্রুপ, হিন্দুস্থান পেন্সিল, ডোমস, সানরাইজ পেন্সিল, ডিকসন পেন্সিল। পেন্সিলের রকমফের জন্য সবার কাছে সমাদৃত। যার যার পছন্দ মতোন পেন্সিল ব্যবহার করতে পারে।

প্রাথমিকভাবে ১৫ ধরনের পেন্সিল ব্যবহার আছে, যেমন গ্রাফাইট, চালকোন, সলিড, কার্বন, কালারড, গ্রিজ, ওয়াটার কালার, নন ফ্রুটো ব্লু, সেটানোগ্রাফার, মেকানিক্যাল, গলফ, ইত্যাদি । গ্রাফাইট ভেদে পেন্সিলের পেন্সিলের গুনগত মান আলাদা হয়ে থাকে।

গ্রাফাইট পেন্সিলের ব্যবহার সাধারণতো চিত্র শিল্পীরা করে থাকে। বাজারে HB, 2B,4B,6B, 8B,10B HH,BBB পাওয়া যায়। যতবড় সংখ্যা পেন্সিলের গ্রাফাইট ততো শক্ত ও কালো হয়। অন্য দিকে HB দিয়ে বুঝানো হয় Black of pencil’s Mark মানে দৃঢ় ও কালো। HH মানে ভীষন দৃঢ়, BBB অর্থ গাঢ় কালো।

বর্তমান দুনিয়াকে প্রযুক্তির শুরুর সভ্যতা বলা হলেও পেন্সিলের ব্যবহারে কোন কমতি নাই। সারা পৃথিবীতে প্রতি বছর ২১.৬ বিলিয়ন পেন্সিল ব্যবহার হয়। ফিনিশিং কাঠের ফ্রেম, চকচকে আবারণ, ১৪ ধাপের রঙিন নকশা আর মনকাড়া প্যাকেজিংয়ের জনপ্রিয় হয়ে আছে পেন্সিল।

আরও পড়ুন

সম্পাদক: এস এম আকাশ

অনুসরণ করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন

স্বত্ব © ২০২৩ কাজী মিডিয়া লিমিটেড

Designed and Developed by Nusratech Pte Ltd.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More