কিশোরগঞ্জ পৌর শহরের নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ দানবাক্স থেকে পাওয়া গেছে ২৩ বস্তা টাকা। টাকার পাশাপাশি ডলার, পাউন্ড, রিয়াল, দিনার, রিঙ্গিত, দিনারসহ বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকারও পাওয়া গেছে।
শনিবার (১৯ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৮টায় দানবাক্স কমিটির আহ্বায়ক ও কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মহুয়া মমতাজের তত্ত্বাবধানে মসজিদের নিচতলায় থাকা আটটি লোহার দানবাক্স খোলা হয়। এ সময় কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ উপস্থিত ছিলেন।
সকাল ৮টা থেকে দানবাক্সে পাওয়া ২৩ বস্তা টাকা গণনার কাজে অংশ নেয় হাফিজিয়া মাদ্রাসার শতাধিক শিক্ষার্থী, রুপালী ব্যাংকের ৫০ জন কর্মকর্তা–কর্মচারীসহ দুই শতাধিক মানুষ।
এর আগে গত ৬ মে মসজিদের দানবাক্স থেকে পাওয়া গিয়েছিল ৫ কোটি ৫৯ লাখ ৭ হাজার ৬৮৯ টাকা। চলতি বছরের শুরুতে গত ৪ জানুয়ারি দানবাক্সগুলো খুলে পাওয়া যায় ২০ বস্তা টাকা। তখন ৪ কোটি ১৮ লাখ ১৬ হাজার ৭৪৪ টাকা পাওয়া গিয়েছিল।এবার তিন মাস ১৩ দিন পর শনিবার খোলা দানসিন্দুক থেকে প্রথমে ২৩টি বড় বস্তায় বস্তায় টাকা ভরা হয়। এর পরই শুরু হয় টাকা গণনার কাজ।
জানা গেছে, পাগলা মসজিদে মানত করলে মনের আশা পূর্ণ হয়। এমন ধারণা থেকে ধর্ম–বর্ণ নির্বিশেষে অসংখ্য মানুষ এ মসজিদে দান করে থাকেন।
কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে পাগলা মসজিদ অন্যতম। শহরের পশ্চিমে হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে মাত্র ১০ শতাংশ জমির ওপর মসজিদটি গড়ে উঠলেও বর্তমানে মসজিদ কমপ্লেক্সের ৩ একর ৮৮ শতাংশ জায়গা রয়েছে। এ মসজিদের পরিধির সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে এর খ্যাতি ও ঐতিহাসিক মূল্য।
মসজিদের দান থেকে পাওয়া এসব অর্থ সংশ্লিষ্ট মসজিদসহ জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানার পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করা হয়। এ ছাড়া করোনা রোগীদের সেবায় নিয়োজিত শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৮০ জন স্বেচ্ছাসেবককেও অনুদান দেয়া হয়েছে এ দানের টাকা থেকে।
পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটি সূত্রে জানিয়েছে, ঐতিহ্যবাহী পাগলা মসজিদে আন্তর্জাতিক মানের দৃষ্টিনন্দন ইসলামিক কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দ্রুতই এর কাজ শুরু হবে। যার নামকরণ হবে ‘পাগলা মসজিদ ইসলামিক কমপ্লেক্স’।
এটি নির্মাণে প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা। সেখানে ৬০ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন। কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, তারা আশা করছেন, খুব দ্রুতই মসজিদ কমপ্লেক্সের কাজ শুরু হবে।
এসএ/দীপ্ত নিউজ