পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা–ভাঙ্গা রেলপথে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা ৭ মিনিটে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনযাত্রার উদ্বোধন করেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। বেলা ১১টা ৩৩ মিনিটের দিকে পদ্মা সেতু পার হয় ট্রেনটি।
এর মধ্যে দিয়ে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে রেলপথে যুক্ত হলো দেশের দক্ষিণ–পশ্চিমাঞ্চল। ঢাকা–ভাঙ্গা ৮২ কিলোমিটার নতুন ব্রডগেজ রেলপথ যুক্ত হচ্ছে দেশের রেল যোগাযোগে।
আগামী ১০ অক্টোবর পদ্মা সেতু দিয়ে আনুষ্ঠানিক ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে ৪ মে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন দেয় সরকার। এছাড়া ৪৩ কিলোমিটার লুপ লাইন (স্টেশনের আগে–পরে বাড়তি লাইন) নির্মাণসহ নতুন ট্রেন চালুর জন্য ১০০টি আধুনিক যাত্রীবাহী বগি কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরই মধ্যে প্রকল্পের ৮২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এই পথে ১২০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচলের লক্ষ্যে কোনো রেলক্রসিং রাখা হয়নি। ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত আগের ৬টিসহ ২০টি আধুনিক স্টেশন করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ব্যয় ধরা হয় ৩৪ হাজার ৯৮৯ কোটি টাকা। পরে বেড়ে প্রকল্পটির ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকায়।
চীনের অর্থায়নে জিটুজি (সরকারের সঙ্গে সরকারের) ভিত্তিতে প্রকল্পের কাজ করছে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ (সিআরইসি)। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে চীনের এক্সিম ব্যাংক ঋণ দিচ্ছে ২৬৬ কোটি ৭৯ লাখ ডলার। বাকি অর্থ ব্যয় করছে বাংলাদেশ সরকার। সব ঠিক থাকলে আগামী বছরের জুন মাসে যশোর পর্যন্ত ট্রেন চলাচল করবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ২০৩০ সাল নাগাদ রেলপথটির ঢাকা–ভাঙ্গা অংশে প্রতিদিন ১৩ জোড়া, ভাঙ্গা–কাশিয়ানী অংশে ৭ জোড়া ও কাশিয়ানী–যশোর অংশে ৫ জোড়া ট্রেন চলবে। এ সময়ের মধ্যে ঢাকা–ভাঙ্গা অংশে বছরে ৪০ লাখ, ভাঙ্গা–কাশিয়ানী অংশে বছরে ১৭ লাখ ও কাশিয়ানী–যশোর অংশে বছরে সাড়ে ১৩ লাখ যাত্রী পরিবহন করা সম্ভব বলে ধরা হচ্ছে।