আসন্ন কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে জমে উঠেছে গরুর হাটগুলো। তবে বাড়তি আকর্ষণ রাখছে কোরবানি উপলক্ষে তৈরিকরা বিশাল আকৃতির বিভিন্ন গরু। ক্রেতার দৃষ্টি কাড়তে অনেক সময় এসকল গরুর সাথে দেয়া হচ্ছে ১৫০ সিসির মটর সাইকেল ফ্রী দেয়ার মতো লোভনীয় প্রস্তাব।
গরুটির মালিক বলছেন, এই ষাড়টিকে কোরবানির আশায় এতো বড় করেছি। তাই যাতে কোরবানির জন্য ক্রেতারা ক্রয় করতে পারেন সেজন্য কোনো কশাইকে গরুটি না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। গতবছর গরুটির ওজন ছিলো ১৫শ কেজি ৩০ লাখ চেয়েছিলাম। তবে দাম ২২ লাখ টাকা উঠেছিলো। এবছর ২শত কেজি ওজন বাড়লেও আমি গরুর দাম বাড়াইনি।
আকৃতি ও চলনবলনে গরুটির নাম রাখা হয়েছে “বিগবস”। আফিল উদ্দীন গরুটি জন্যে দাম হাকাচ্ছেন ৩০ লাখ টাকা। গরুটি কিনলেই সাথে থাকছে একটি ১৫০ সিসির পালসার মোটরসাইকেল ফ্রী। ইতিমধ্যে জেলাজুড়ে সাড়া ফেলেছে আফিলের এই বিগবস। আলোচিত ও সারা জাগানো এই বিগবসকে একপলক দেখার জন্য স্থানীয়রাসহ অনেক দূরদুরান্ত থেকে ছুটে আসছেন শতশত মানুষ।
ছয় বছর আগে মাত্র ৯০ দিন বয়সে ও ২৭ কেজি ওজনের এই গরুটিকে ক্রয় করেন আফিল উদ্দিন। তখন থেকে প্রাকৃতিক খাবার ও ফলমূল খাওয়ায় ষাড়টিকে বিশাল আকৃতির করেছেন তিনি। গত বছর এই গরুর দাম ২২ লাখ টাকা বললেও কাঙ্খিত দাম না পাওয়ায় বিক্রয় করেননি তিনি। এবার আশা করছেন কাঙ্খিত দামে বিক্রয় করতে পারবেন। গরুটি ঘর থেকে বের করতেই প্রয়োজন হয় প্রায় ৮ থেকে ১০ জন মানুষ। তাই বাসা থেকেই গরুটি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মালিক আফিল উদ্দীন।
স্থানীয়রা বলছেন, নিজের সন্তানের মতো যত্ন করে গরুটিকে বড় করেছেন আফিল উদ্দিন ও তার স্ত্রী। আর দূরদুরান্ত থেকে দেখতে আসা দর্শনার্থীরা গরুটিকে দেখে অভিভুত হচ্ছেন। এর আগে এতো বড় আকৃতির গরু কখনো দেখেননি এটাই হয়তো পৃথিবীর শ্রেষ্ট গরু বলে মনে করছেন তারা। এবার ন্যায্য ও কাঙ্খিত মূল্যে গরুটি বিক্রয় হবে বলে প্রত্যাশা তাদেরও।
গরুকে মোটাতাজা করার জন্য কোন প্রকার ঔষধ ব্যবহার করা হয়নি। ৬ বছর ধরে বিগবসকে খেসারির ডাল, ভুষি, ছোলাবুট, মসুর ডাল ও খুদি খাওয়ানো হয়েছে। এছাড়াও ফল হিসেবে আপেল, কমলা, আঙ্গুর, কলা ও ডাব খাওয়ানো হয়। এতে সাড়া দিনে প্রায় ২৫’শ টাকার খাবার খাওয়ানো হয় বলে জানান গরুর মালিক।
এমন বড় আকৃতির বা ওজনের দ্বিতীয় গরু জেলায় নেই। আফিল উদ্দিন এই ষাড়টিকে খুব যত্নসহকারে মাংসের জন্য লালন পালন করেছেন। গরুটিকে কোন খারাপ মেডিসিন প্রয়োগ করা হয়নি ও গরুটিকে পরিদর্শন করে পরামর্শ প্রদান করছেন বলে জানান জেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় এবার ৪ হাজার ৩১৭ জন খামারি এবার ৫৮ হাজার গবাদিপশু ও ৩০ হাজার ছাগল কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। জেলায় পশুর চাহিদা ৭৫ হাজার হলেও চাহিদার তুলনায় প্রায় ১৩ হাজার পশু বেশি আছে।
মঈনুদ্দীন তালুকদার হিমেল/আফ/দীপ্ত নিউজ