আলোচিত কর ও ব্যয়–সংক্রান্ত বাজেট বিলকে ঘিরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং টেসলা ও স্পেসএক্স প্রধান ইলন মাস্কের মধ্যে চলমান মতবিরোধ অবশেষে প্রকাশ্য দ্বন্দ্বে রূপ নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) ট্রাম্প ও মাস্কের পাল্টাপাল্টি আক্রমণাত্মক মন্তব্য মার্কিন রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। দুজনের সম্পর্ক এতদিন বন্ধুত্বপূর্ণ বলেই বিবেচিত হলেও এবার তা দৃশ্যত ফাটল ধরেছে।
ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘ইলনের সঙ্গে আমার খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। জানি না, সেটা আর থাকবে কি না। আমি ভীষণ হতাশ।‘
তিনি আরও বলেন, ‘মাস্ক এ বিলের প্রতিটি খুঁটিনাটি জানতেন, অথচ এখন হঠাৎ করেই তিনি এর সমালোচনায় মুখর হয়েছেন। এটি বিস্ময়কর।‘
ট্রাম্পের এই মন্তব্য টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইলন মাস্ক তার মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স–এ (সাবেক টুইটার) লাইভ টুইট করে পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি ট্রাম্পকে ‘অকৃতজ্ঞ’ বলে উল্লেখ করে দাবি করেন, ‘২০২৪ সালের নির্বাচনে আমি সহায়তা না করলে তিনি জিততেই পারতেন না।‘
এদিকে, ট্রাম্পের সমালোচনা এবং মাস্কের কড়া জবাবের পরপরই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দেয়, যার ফলস্বরূপ টেসলার শেয়ারদর বৃহস্পতিবার রাতেই ৭.৮ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পায়। একদিনেই কোম্পানিটির বাজারমূল্য থেকে প্রায় ৬০ বিলিয়ন ডলার উড়ে যায়।
‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল’ নামে পরিচিত ২০২৫ সালের ট্রাম্প প্রশাসনের কর ও ব্যয় সংক্রান্ত বাজেট বিলটি গত ২২ মে রিপাবলিকান–নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদে মাত্র এক ভোটের ব্যবধানে পাস হয়। বিলটি অনুযায়ী সামরিক খাতে ব্যয় বৃদ্ধি পেলেও সামাজিক সেবাখাতে বরাদ্দ কমানো হয়েছে।
ইলন মাস্ক এর তীব্র বিরোধিতা করে বলেন, ‘এই বিল জঘন্য। এটি বাজেট ঘাটতি বাড়িয়েছে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ওপর অনৈতিক ঋণের বোঝা চাপিয়েছে।‘
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ট্রাম্প–মাস্ক দ্বন্দ্ব কেবল বাজেট বিলকেন্দ্রিক নয়, এর পেছনে ব্যক্তিগত অভিমানও রয়েছে। মাত্র এক সপ্তাহ আগেই মাস্ক যুক্তরাষ্ট্রের ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিশিয়েন্সি’র (DOGE) প্রধানের পদ থেকে সরে দাঁড়ান। বিদায়ের সময় ওভাল অফিসে একটি আনুষ্ঠানিক বিদায় সংবর্ধনার আয়োজন করেছিলেন ট্রাম্প নিজেই।
প্রযুক্তি বিশ্লেষক মারিয়া পিটারস বলেন, ‘মাস্ক যদি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ডেমোক্র্যাট বা নিরপেক্ষ অবস্থানে যান, তবে আগামী নির্বাচনে বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে।‘