ঢাকা–টাঙ্গাইল–যমুনা সেতু মহাসড়কে আবারও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ৮–১০ জন নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানিও করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে বুধবার ভোর ৫টা পর্যন্ত বাসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ডাকাত দল যাত্রীদের সবকিছু ঘটে নেয়। এ ঘটনায় বুধবার বিকেলে বাসের যাত্রী মিনু মিয়া বাদি অজ্ঞাত ৮ থেকে ১০ জনকে আসামি করে হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় শ্লীলতাহানি কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে ঢাকার আব্দুল্লাহপুর থেকে আল ইমরান পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস রংপুরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। পথে সাভারের নরসিংহপুর, বাইপাইল, আশুলিয়া থেকে কিছু যাত্রী উঠে। প্রায় ১০ জন নারীসহ ৪৫ জন যাত্রী নিয়ে বাসটি রাত সাড়ে ১১টার দিকে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা অতিক্রম করে। যমুনা সেতুর পূর্বপ্রান্তের সংযোগ সড়কের কয়েক কিলোমিটার যাওয়ার পর যাত্রীবেশী ৮/১০ জন ডাকাত ছুড়ি, চাপাতিসহ দেশীয় অস্ত্রের মুখে চালকের কাছ থেকে বাসটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। পরে তারা যাত্রীদের ও বাসের চালকসহ সকলের চোখ, মুখ বেঁধে ফেলে।
যমুনা সেতুর পূর্বপ্রান্তের গোলচত্তর এলাকায় গিয়ে বাসটি ঘুরিয়ে আবার ঢাকার দিকে চলতে থাকে। চলাচলের সময় প্রত্যেক যাত্রীকে তল্লাশী করে মোবাইল ফোন, নগদ টাকা, সোনাগহনা এবং অন্যান্য মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এসময় একাধিক নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানী করা হয়। তারা বাসটি নিয়ে সাভারের চন্দ্রা–আশুলিয়া পর্যন্ত যায়। পরে রাতভর কয়েকবার বাসটি নিয়ে ওই এলাকা থেকে টাঙ্গাইল পর্যন্ত চক্কর দেয়। পরে ভোরে থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ বাসটি উদ্ধার করে সদর থানায় নিয়ে আসে।
বাসের যাত্রীরা বলেন, দেশীয় অস্ত্রের মুখে আমার সব কিছু লুট করা হয়েছে। টাকা–পয়সা ছিনিয়ে নেয়ার জন্য নারী যাত্রীদের তল্লাশীর সময় শ্লীলতাহানীর ঘটনা ঘটে। তার চোখমুখ বাঁধা ছিল। পরে ভোর টাঙ্গাইলে বাসটি রেখে ডাকাতদল পালিয়ে যায়।
টাঙ্গাইল সদর সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, এ ঘটনায় এক যাত্রী থানায় মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশের ডিবি ও সদর থানাসহ একাধিক টিম ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি এই মহাসড়কে ইউনিক রয়েলস এর একটি বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানীর ঘটনা ঘটে। ২০২২ সালের ২ আগস্ট একই কায়দায় কুষ্টিয়াগামী একটি বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।