জামালপুরে বেসরকারী ক্লিনিক এম এ রশিদ হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় হাসি খাতুন (৩০) নামের এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
নিহত প্রসূতির পরিচয় সদর উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়নের শিতলকুশা গ্রামের নূরল মৌল্লিকের স্ত্রী নিহত হাসি খাতুন।
শনিবার ( ২ নভেম্বর ) দিনগত রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত হাসি খাতুনের ঘরে আগেই আরাফাত (৭) বছর বয়সী এক পুত্রসন্তান ও নুন মনি (৫) বছর বয়সী ক কন্যাসন্তান রয়েছে। তৃতীয় সন্তান প্রসূবের সময় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। তবে নবজাতকটি সুস্থ রয়েছে।
জানাগেছে,জামালপুর এম এ রশিদ হাসপাতালে ডা. রুমানা আরমান গতকাল শুক্রবার (১ নভেম্বর ) বিকালে এই সার্জারী করেন। সার্জারি করার সময় রোগীর নাড় কেটে রক্তক্ষরণের কারণে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোগী মৃত্যুর কারন বলে অভিযোগ স্বজনদের। এই ঘটনায় শহরে আলোচনার ঝড় উঠেছে।
নিহতের স্বজনেরা বলেন, প্রায় দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে অপারেশন করছেন। এরই এক সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের লোকজন বলেন, রোগীর প্রচুর রক্তপাত হচ্ছে। আপনারা রক্তের ব্যবস্থা করেন দ্রুত। আমরা অল্প সময়েই ১৪ ব্যাগ রক্ত মিল করে দিয়েছি। এসময় কয়েকজন চিকিৎসক এসে রক্তপাত বন্ধ করার চেষ্টা করেন কিন্তু কোন লাভ হয়নি। পরবর্তী সময় আমাদের রোগীকে বাঁচাতে পারেননি।
নিহতের মামা রাজু আহমেদ বলেন, ডাক্তার রুমানা আরমান আমার ভাগনীর নাড়ি কেটে ফেলেন। তার ভুল চিকিৎসার জন্য ভাগনীকে অকালে প্রাণ দিতে হলো। আমরা এদের সঠিক বিচার চাই।
নিহত প্রসূতির চাচাতো ভাই রোমান বলেন, রাত ৯ টায় রোগী মারা গেছে কিন্তু হাসপাতাল কতৃপক্ষ আমাদের কে নানা অযুহাত দিয়ে ১৪ ব্যাগ রক্ত সংরক্ষণ করিয়েছে। রোগীর অবস্থা খারাপ হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য আমরা ভালো হাসপাতালে নিয়ে যাবো ।কিন্তু তারা আমাদের রোগীকে ছেড়ে দেয় নাই।
নিহতের স্বামী নূরল মৌল্লিক বলেন, আমি হাসপাতালের লোকজন কে বলেছি যা যা প্রয়োজন আমরা তাই দিবো। তবু্ও আমার রোগীকে বাঁচান। তারা আমার স্ত্রীর নাড় কেটে ফেলেছে, তারা আমাকে মিথ্যা আস্বাস দিয়েছে। ভুল চিকিৎসায় আমার স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে।
এম এ রশিদ হাসপাতালের ব্যবসা ও জনসংযোগ বিভাগের মো, আরিফুল হক জানান, প্রসূতি রোগী তার আগে থেকেই একটি রোগ ছিল। সেই সম্পর্কে নিহতের স্বামী জানতো। এছাড়াও আগেই জানানো হয়েছে রোগীর জন্য পর্যাপ্ত রক্ত লাগবে। যে ডাক্তার অপারেশন করেছে তিনি অত্যন্ত দক্ষ, তার অনেক ডেলিভারি কেস হ্যান্ডেল করার ইতিহাস রয়েছে। তারপরেও আমরা হাসপাতালের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। কোথাও কোন গ্যাপ থাকলে সেটি আমরা জানাবো।
জামালপুর সিভিল সার্জন ফজলুর করিম বলেন, এম এ রশিদ হাসপাতালে রোগী মৃত্যুর ঘটনাটি আমরা শোনেছি, আমরা বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
হীরা/ সুপ্তি/ দীপ্ত সংবাদ